দাঁত, পিঠ বা শরীরের অন্য কোথাও ব্যথা হলে আপনি কি করেন? বেশিরভাগ মানুষই ব্যথানাশক ওষুধের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু জানেন কি, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সেসবের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়াল বলছেন, প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যথার ওষুধের একটি দুর্দান্ত বিকল্প হতে পারে।
তিনি বলেন, আপনি ওষুধের বক্সের কাছে যাওয়ার আগে এই প্রাকৃতিক পাওয়ারহাউসগুলো নির্বাচন করতে পারেন, যা ব্যথা এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে।
প্রাকৃতিক ব্যথা উপশম সিস্টেম কী? খাদ্য কীভাবে ব্যথা সাহায্য করে?
আমাদের মসলার তাকগুলো এমন উপাদানের ভাণ্ডার যা আমাদের রান্নার বাইরেও বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত করে। এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগ দিয়ে ভরা এবং শরীরের ব্যথা কমানো সহ আমাদের ভেতর থেকে সুস্থ করে।
সার্জিক্যাল নিউরোলজি ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে একটি জরিপ অনুসারে, ‘আঘাতের প্রতি মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হলো প্রদাহজনিত ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ খেলে শরীরে প্রদাহ কম হয়। তবে এসব ওষুধের গ্যাস্ট্রিক আলসারেশন এবং কিছু ক্ষেত্রে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন এবং স্ট্রোকের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকতে পারে, এমনটাই বলছে গবেষণা। গবেষকরা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগের দিকে নজর দিয়েছেন যা প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকরী।’
পুষ্টিবিদরা ব্যথা দূর করার জন্য এই প্রাকৃতিক উপায় বেছে নেওয়ার কথা বলছেন।
আপনার রান্নাঘরেই রয়েছে ব্যথার প্রাকৃতিক সমাধান!
১. আদা: পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়াল আদাকে প্রকৃতির প্রদাহ বিরোধী যোদ্ধা হিসাবে উল্লেখ করেছেন। শক্তিশালী যৌগ দিয়ে পূর্ণ আদা প্রদাহ কমাতে পরিচিত। এই প্রদাহ পেশী ক্র্যাম্পের নেপথ্যে প্রধান অপরাধী হতে পারে। এক কাপ প্রশান্তিদায়ক চায়ের জন্য কয়েক টুকরা আদা তাতে যোগ করুন অথব আপনার প্রতিদিনের খাবারে নানা উপায়ে আদা যোগ করে নিন। কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
২. হলুদ: এটিকে কেবল একটি মসলার চেয়েও বেশি হিসাবে উল্লেখ করে নমামি আগরওয়াল বলেছেন যে, এতে থাকা কারকিউমিন অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। যে কারণে হলুদ খেলে তা একাধিক উপায়ে আপনার ব্যথা মোকাবিলায় সহায়তা করে। তাই ব্যথানাশক ওষুধের বদলে হলুদ বেছে নিতে পারেন। হলুদের সঙ্গে গোল মরিচ কিংবা অলিভ অয়েল যোগ করে খেলে উপকার পাবেন। প্রতিদিন এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন দ্রুতই।
৩. মৌরি: মৌরিতে রয়েছে কারমিনেটিভ বৈশিষ্ট্য, যা গ্যাস বের করে দিতে সাহায্য করে এবং ফোলাভাব, অ্যাসিডিটি এবং অন্যান্য অন্ত্রের জ্বালাও কমিয়ে দেয়। যে কারণে প্রদাহ এবং ব্যথার দূর করা সহজ হয়। খাবার খাওয়ার পর কিছুটা মৌরি নিয়ে চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন। মৌরি চা তৈরি করেও খেতেস পারেন। তবে খুব বেশি পরিমাণে খাবেন না।
তবে মনে রাখবেন, তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।