ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪

শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

ডিএনএ ম্যাচ না হলে দেহাবশেষ আবারও রাখা হবে কুমিল্লার যুদ্ধসমাধিতে

Rising Cumilla - If there is no DNA match, the remains will be re-interred in Comilla War Cemetery
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি) থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ২৩ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সৈনিকদের দেহাবশেষের কিছু অংশ ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষার জন্য জাপান নেওয়া হবে।

তবে ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেলে পরবর্তীতে ঢাকায় সংগ্রহে থাকা সৈন্যদের দেহাবশেষ জাপানে নেওয়া হবে। তবে ডিএনএ না মিললে এসব দেহাবশেষ আবার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে রাখা হবে।

গতকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকায় জাপান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন জাপানের সাত সদস্যের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দলনেতা ইনোওয়ে হাসোয়েকি।

ইনোওয়ে হাসোয়েকি বলেন, ময়নামতিতে ২৪ জন জাপানি সৈনিকের মধ্যে ২৩ জনের দেহাবশেষ আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি। সংগৃহীত অংশের কিছু জাপানে নিয়ে যাওয়া হবে ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য, বাকি অংশ এখানে (ঢাকায়-জাপান দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে) থাকবে। জাপানে ডিএনএ পরীক্ষা করার পর যদি দেখা যায় এটা জাপানি সৈন্যের না, তখন আমরা ময়নামতিতে কবরে নিয়ে আসব, আবার সেখানে সংগ্রহ করা হবে। আর যদি ডিএনএ পরীক্ষায় ম্যাচ করে তাহলে ঢাকায় সংগ্রহে রাখা অংশ সম্পূর্ণভাবে জাপানের নেওয়ার প্রক্রিয়া করা হবে।

বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় ৮১ বছর পর গত ১৩ নভেম্বর কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে জাপান। জাপান সাত সদস্যের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশটির সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়া কাজ শেষ করেছে। একজন সৈনিকের দেহাবশেষ খুঁজে পায়নি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। এর মধ্যে ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনেরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান। ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন যোদ্ধার মধ্যে ইসলাম ধর্মের ১৭২ জন, বৌদ্ধধর্মের ২৪ জন, হিন্দুধর্মের ২ জন ও বাকিরা খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, কানাডার ১২, অস্ট্রেলিয়ার ১২, নিউজিল্যান্ডের ৪, দক্ষিণ আফ্রিকার ১, অবিভক্ত ভারতের ১৭১, রোডেশিয়ার ৩, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬, বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) ১, বেলজিয়ামের ১, জাপানের ২৪ জন এবং পোল্যান্ডের ১ জনের সমাধি আছে।

প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনারসহ তাদের প্রতিনিধিরা এই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। কমনওয়েলথ গ্রেভইয়ার্ড কমিশন এ যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে।