মার্চ ১২, ২০২৫

বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

‘প্রবাসীদের জন্য প্রক্সি ভোটের কথা ভাবছেন নির্বাচন কমিশন’

A woman voted
ভোট দিছে এক নারী | পুরনো ফাইল ছবি

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে প্রক্সি ভোটকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ‘এতে করে প্রবাসী বাংলাদেশির পক্ষে দেশে অবস্থানরত একজন তার পক্ষে ভোট দিতে পারবেন। নিজের আস্থাভাজন ব্যক্তিকেই প্রক্সি হিসেবে নির্বাচন করবেন প্রবাসী ভোটার।’

আজ মঙ্গলবার  আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। কমিটি তিন পদ্ধতির মধ্যে প্রথম দুটি পদ্ধতি (পোস্টার ব্যালট আর অনলাইন) ট্রায়ালের জন্য সাজেস্ট করেছে। এটাকে ডেভেলপ করে টেস্ট করে দেখা যায়, কোনটি বাস্তবায়ন করা যায়। আর আগামী নির্বাচনের জন্য তার সাজেস্ট করেছে, যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে হয় এবং প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চান, তাহলে আমাদের প্রক্সি ভোটিংয়ে যেতে হবে।’

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশির পক্ষে দেশে অবস্থানরত একজন ভোটার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় তার হয়ে ভোটটা দিয়ে দেবেন। এটা হচ্ছে প্রক্সি ভোট। আমাদের কমিটির কাছে বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, পরিচয় নিশ্চিত হওয়া, ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা। যে সিস্টেমেই যাই না কেন, তা হতে হবে নির্ভরযোগ্য।’

এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বর্তমানে কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পরিসরে প্রক্সি ভোটিং প্রচলিত আছে। তারমধ্যে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আর ভারতে শুধু সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রচলিত আছে। এই পদ্ধতির সুবিধা হলো, এটা প্রচলিত আছে—পাওয়ার অ্যার্টনির মাধ্যমে তো জমিজমাও বিক্রি করে থাকি, তাহলে ভোটও তো অধিকার। যদি সেটাকে আমরা এভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, তবে একটা ফলাফল আসবে। বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধীদের ভোট আরেকজন দিতে পারে, যদিও এটা প্রক্সি ভোটের সঙ্গে মেলানো যাবে না। তবে আমরা বলছি, একটা স্কোপ (সুযোগ) আছে। এটাই খুব কম সময়ে রিয়েল টাইমে করা সম্ভব। এজন্য আগামী ৮ বা ৯ এপ্রিলের মধ্যে একটা কর্মশালা হবে। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব৷’

Rising Cumilla - Abul Fazal Md Sanaullah
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ/ছবি: সংগৃহীত

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইএসটিকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে। এর বাইরেও কোনো প্রতিষ্ঠান যদি সহায়তা করতে পারে, সংস্কার কমিশনের বিশেষজ্ঞকেও আমন্ত্রণ জানাব৷ নির্বাচন কমিশনের সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও এনজিওকেও আমন্ত্রণ জানাব৷ আমরা একটা সিস্টেম আর্কিটেকচার ডেভেলপ করতে চাই। এই তিন পদ্ধতির তিনটা। এরপর আমরা দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। এরপর যদি দেখি এইটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, তখন আমরা সিন্টেম ডেভেলপমেন্টে যাব। পরে টেস্টিং ও অডিটিংয়ে যেতে হবে। এরপর আমাদের আইনে পরিবর্তন আনতে হবে। ফাইনালি ট্রায়াল রানে যাব। আমরা আশা করছি, যদিও এটা কন্ডিশনাল ব্যাপার, সব যদি করতে পারি প্রক্সি ভোটটা মোটামুটি পরিসরে আর বাকিগুলো ট্রায়াল বেসিসে বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমাদের ধারণা।’

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রবাসী ভোটারদের প্রকৃত তথ্য যদিও নেই৷ তবে যে ৩৪‍টি দেশের ৪৪ মিশন থেকে আমরা তথ্য নিয়েছি, সেখানে এক কোটি ৩২ লাখের মতো রয়েছে। যদি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধরে নিই, তবে ভোটার তো এক কোটি৷ যাদের ভোটার তালিকায় নাম আছে, তারাই কেবল প্রক্সি ভোট দিতে পারবে। এজন্য ৪০টি দেশে আমরা ভোটার কার্যক্রম চালাব, তবে আগামী নির্বাচনের আগে কতটুকু পারব জানি না।’

চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গ্লোবালি একসেপ্টেড (গ্রহণযোগ্য) কোনো সিস্টেম আমাদের হাতে নেই। এরকম যদি থাকত তাহলে সেটাই করতাম। এখন নতুন একটি সিস্টেম ডিভাইস করতে হচ্ছে। আশা করি সফল হব। বিশেষজ্ঞরাই আসলে বলতে পারবে কতদিন লাগবে। তবে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে আমরা বলতে পারব, কত সময় লাগবে।’

নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, এবার আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করতে চাই। আশ্বাস নয়, বাস্তবায়ন করতে চাই। এই আলোকে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কমিটিকে দায়িত্ব প্রদান করে, একটা প্রস্তাব দেওয়ার জন্য।’