
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আলোর মুখ দেখতে চলেছে ‘মিড ডে মিল’ কর্মসূচি। চলতি মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে তা পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী মাসেই দেশের ৬২ জেলার প্রায় ৩১ লাখ ৩০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুপুরের খাবার পেতে শুরু করবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিকভাবে, দেশের ৮টি বিভাগের ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এই কর্মসূচির আওতায় আসবে।
প্রকল্পের যুগ্মসচিব হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, সেপ্টেম্বরেই শিক্ষার্থীদের হাতে খাবার পৌঁছে দিতে অধিদপ্তর জোর কদমে কাজ করছে।
তিনি আশাবাদী যে, অক্টোবরের মধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তাঁর কথায়, “আমাদের মূল লক্ষ্য—শিক্ষার্থীদের হাতে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছে দেওয়া। সেই লক্ষ্যে সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে।”
২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রকল্পটি। এর জন্য মোট ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার ৯৭ শতাংশই খাদ্য সরবরাহের জন্য নির্ধারিত। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি।
সপ্তাহে পাঁচ দিন স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হবে। খাবারের তালিকায় থাকছে:
* রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার: বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম।
* সোমবার: বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ।
* বুধবার: ফরটিফাইড বিস্কুট এবং মৌসুমি ফল বা কলা।
প্রতিটি খাদ্যপণ্যের ওজনও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে: বনরুটি: ১২০ গ্রাম, ডিম: ৬০ গ্রাম, দুধ: ২০০ মিলি, বিস্কুট: ৭৫ গ্রাম, ফল: ১০০ গ্রাম।
তদারকি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সফল বাস্তবায়ন এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য কঠোর তদারকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি স্কুল ফিডিং মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত আছেন।
এছাড়াও, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১৯২টি ব্যাচে প্রায় ১৯ হাজার ৭১৯ জন প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওরিয়েন্টেশন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যা প্রকল্পের সুষ্ঠু পরিচালনায় সহায়ক হবে।