বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কুমিল্লা নগরীতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আজ শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইন ও রেসকোর্স এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা পৌনে ১টায় কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইনে অবস্থান নিয়েছিলো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ইট পাটকেল ছুঁড়ে।
এক পর্যায়ে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আশেপাশের বিভিন্ন বাসায় অবস্থান নেয়।
সর্বশেষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিভিল সার্জন কুমিল্লা ও ডিরেক্টর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুমিল্লা সদর মেডিক্যালে এখন পর্যন্ত ১৩ জন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এরমধ্যে ৮ জন গুলিবিদ্ধ (ছররা গুলি)। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি।
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগের এই সংঘর্ষের ফলে ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্থানীয়দের মধ্যে একধরনের ভীতি বিরাজ করতে দেখা যায়। বর্তমানে কুমিল্লা নগরীর অধিকাংশ মার্কেট ও দোকানপাট বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
এর আগে, সকালে নগরীর কান্দিরপাড় জিলা স্কুলের সামনে থেকে পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র পূবালী চত্ত্বরে অবস্থান করে ও এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কুমিল্লা পুলিশ লাইনে অবস্থান নেয়। এছাড়া, সকাল থেকেই কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছিল আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ গণমিছিলে অংশ নেয় কুমিল্লা জিলা স্কুল, কুমিল্লা হাই স্কুল, কুমিল্লা মডার্ন স্কুল, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুলসহ কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাঁদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়। তাঁদের উল্লেখযোগ্য কিছু স্লোগান হলো, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে রে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’।