আজ ৮ সেপ্টেম্বর, ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস পূর্ণ হলো। গত ৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একপ্রকার থমকে যাওয়া বাংলাদেশের সংস্কারের দায়িত্ব মানুষ কাঁধে তুলে দেন অভিজ্ঞ আর নতুনের মিশেলে তার নেতৃত্বের উপদেষ্টা পরিষদকে।
শুরু থেকেই দাবি দাওয়া আদায়ে রাজপথে সরব নানা পক্ষ। কখনও তা যৌক্তিক আবার কখনো তা হয়েছে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেন ঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার কাজটাই এখনও শুরু করতে পারছে না অন্তর্র্বতী সরকার। তারপরও অনেক সিদ্ধান্ত এসেছে, ধীরে হলেও হচ্ছে পরিবর্তন। যেহেতু জনআকাঙ্খার সরকার তাই মানুষ ফলাফলও পেতে চাইছে দ্রুত। সে পথের রূপরেখা কী এই সময়ে দেখাতে পেরেছেন ড. ইউনূস।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মনে রাখতে হবে গত সরকার কী কী আচরণের কারণে বিদায় নিয়েছে। তাদের শাসনের যে চেহারা ছিল তার থেকে তাদের ব্যবহারের চেহারা আমাদের বেশি আহত করেছিল। কাজেই যে মৌলিক চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে আমরা সেই মৌলিক চেতনায় থাকতে চাই। সেখান থেকে যতটুক সংযোজন বা বিয়োজন দরকার সেটি করতে চাই। একটাই উদ্দেশ্য বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতা যেনো জনগণের হাতে থাকে।
তারা বলছেন, যা আগে হয়নি কখনো, কিংবা হবে এমন চিন্তাও করা যায়নি-সে উদ্যোগ তো শুরু হয়েছে।
তবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের চাপ দেয় তবে তা বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী হবে। এই বিপ্লোব হয়েছে আমাদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তার মানে আপনি বৈষম্য দূর করবেন, এর মানে আপনি রাষ্ট্র সংস্কার করবেন, সংবিধান সংশোধন করবেন এবং ক্ষমতার ভারসাম্য আনবেন। এরপর যদি নির্বাচন দেয়া হয় তাহলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নির্বাচনের চেহারা পাবে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, এখন যে বড় দল বা ছোট দল আছে তাদের সবার ভেতরে একটি উত্তেজনা তৈরি হয়েছে যে দ্রুত নির্বাচন দেয়া হোক আর তারা ক্ষমতায় যাবে। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে একটা বড় দল যদি আন্দোলন শুরু করে তাহলে উনি জনগণের সামনে কথা বলতে পারেন যে-আপনারা যদি সময় না দেন তাহলে নির্বাচন দিয়ে চলে যাবো। কিন্তু এতে লাভটা কার হবে ক্ষতিটা কার হবে। যে দল ক্ষমতায় যাবে তাদের জন্য লাভ হবে তবে দেশের জন্য কোনো লাভ হবে না। তাদের ভাষ্য স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিবেশিদের কাছে আত্মমর্যাদার জানান দেয়ার যে মানসিকতা দেখিয়েছে বর্তমান সরকার তা প্রশংসনীয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যবস্থার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ ভঙ্গুর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিকে জনমুখী করা।
এছাড়াও আছে সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনের বাধ্যবাধকতাও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের চাপ দেয় তা হবে আত্মঘাতী।