ডিসেম্বর ১১, ২০২৪

বুধবার ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

আমাদের এমন সময় কেন দেখতে হলো?

সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বেশ কিছু ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছি— হয়তো এটাও আমাদের জন্য শিক্ষা। সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইকে জবাই করা হয়েছে। তাও বাংলাদেশের মতো মুসলিম একটি দেশে। এর চেয়েও বড় কথা তিনি একজন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন।

এর আগেও আমরা দেখেছি আবরার ফাহাদের হত্যাকান্ড। তাহলে কী পরপর ঘটনাগুলো আমাদের কিছুর ইশারা দিচ্ছে। দেশকে এমন পরিস্থিতির দিকে কারা নিয়ে যাচ্ছে এমন কত প্রশ্ন ভাসছে আমাদের হৃদয়ে।

আমাদের রাষ্ট্রের মাথা থেকে পচন ধরার কারণে আজকে আমরা এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছালাম। দেশের একশ্রেণির বুদ্ধিজীবীরা এর জন্য দায়ী। বুদ্ধিজীবীদের কথা ও কাজে কোনো মিল নেই। বাংলাদেশকে যতটা দেওয়ার কথা তার থেকেও বেশি তারা নিয়ে যাচ্ছে। আহমদ ছফা একটা কথা বলতেন, “ বুদ্ধিজীবীদের কাজ হলো চিন্তা করা কিন্তু তারা  যদি চিন্তার অভিনয় করে তাহলে ক্ষতিটা দেশের হবে। চিন্তার অভিনয় করে চিন্তার জগৎকে  অপমানিত করার কোনো প্রয়োজন নেই।”

আমরা এখন সেই সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন সমাধানের জন্য বেশি সময় নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কারণ কেউ এখন আর অন্যের উপর নির্ভরশীল নয়। বাংলাদেশ ৯০ শতাংশ মুসলমান অধ্যুষিত দেশ কিন্তু জবাই করে শহীদ করলো মুসলমানকেই। তাহলে হিসাব কী দাড়ালো, আর কী হারালো। একটি দেশের আইন কীভাবে এতো নরমালাইজেশন হয়। মানুষ নিজেও বুঝতে পারে না, তাকে কেন মারা হলো বা তারাও কেন মারলো। আবার দেখা যায় একদল তথাকথিত ইতর-ভদ্র বুদ্ধিজীবী নিজ দায়িত্বে এই সন্ত্রাসীদের জন্য মানুষের নিকট আবেদন করছেন।

পৃথিবীতে সবার নির্দিষ্ট পরিচয় রয়েছে, তার মধ্যে সন্ত্রাসীরা একটা দল এবং তাদের একমাত্র পরিচয় হলো তারা সন্ত্রাসী; তার বাহিরে আর কোনো নির্দিষ্ট পরিচয় আছে বলে আমরা মনে করি না।

ড. মীর্জা গালিব বলেছেন, “পৃথিবীতে কোন ধর্ম অন্যায় শিখায় না, কোন ধর্ম নির্যাতন শিখায় না। যখন এটি অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতনে রুপ নেয় তখন এটি আর ধর্ম থাকে না, এটি হয়ে যায় উগ্রজাতীয়তাবাদ”।

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা মানে সারা পৃথিবীর মানুষদের হত্যা করার সমান”। আরো বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই ফেতনা হত্যার থেকেও নিকৃষ্ট কাজ”। আল্লাহ তা’য়ালা বারংবার বলেছেন ,  “নিশ্চয়ই সীমালঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।” এগুলো হলো শান্তির বাণী কিন্তু তাও পৃথিবীতে মুসলমানদের বার বার নির্যাতন করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ইজরায়েল সন্ত্রাসী বাহিনী বারবার আক্রমন করে হাজার হাজার মুসলমানদের শহীদ করছে। হাজার হাজার শিশুদের চিৎকারের আওয়াজে মাটি  কেঁপে গেছে কিন্তু একটু থামলো না তাদের নির্যাতন। বাংলাদেশ থেকে এসব ইসকন নামে সন্ত্রাসী সংগঠন নির্মূল করা উচিৎ বা এমন আরো যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো আছে সবগুলোকে নিষিদ্ধ করা হোক। দেশের শান্তি নির্মাণ করার জন্য, দেশের মানুষের মাঝে শান্তির বাণী পৌঁছানোর জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের মত আর যেন কেউ এভাবে শহীদ না হয়, তা নিশ্চিত  করতে হবে।

সাবের হোসেন সৌরভ

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।