বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জারি সরকারের

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

Rising Cumilla -New guidelines issued for travel to St. Martin's Island
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা জারি সরকারের/ছবি: সংগৃহীত

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করতে সরকার নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নাজুক পরিবেশ রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর), পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে মোট ১২টি নির্দেশনা সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

আইনের আওতায় নির্দেশনা:

এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১নং আইন)-এর ধারা-১৩ অনুযায়ী প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ (এস.আর.ও নং-১৬৫-আইন/২০২৩, তারিখ : ২৩ মে ২০২৩)-এর আলোকে।

নৌযান চলাচল ও টিকিট ব্যবস্থায় নতুনত্ব:

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না।

পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ‘ট্রাভেল পাস’ এবং একটি ‘কিউআর কোড’ সংযুক্ত থাকবে। এই কিউআর কোড ছাড়া কোনো টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটক উপস্থিতির কড়াকড়ি: দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটকদের উপস্থিতি এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, এই সময়ে রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পর্যটকদের জন্য রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। দৈনিক গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।

পরিবেশ দূষণকারী কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা: সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে বেশ কিছু কাজকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে:

দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো।

শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা।

কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়।

সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা।

সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যে কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল।

সরকার আশাবাদী, এই নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি হবে দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

আরও পড়ুন