কাঙিক্ষত পরিমানে মাছ মিলছেনা সাগরে জেলেদের জালে। সাগরে কম মাছ ধরা পড়ছে। জেলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের সরবরাহ কম হওয়ায় সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমান কমে গেছে ।
বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র-বিএফডিসি ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে দিনে ও রাতে বিভিন্ন সময়ে একের পর এক ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরছেন সমুদ্রগামী জেলেরা।
তবে সাগরে গিয়ে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়ায় অনেকটা খালি ট্রলার নিয়েই তীরে ফিরছেন তারা। আর ঘাটে মাছ কম আসায় এক প্রকার বেকার সময় পার করছেন ঘাটে থাকা মৎস্য শ্রমিকরা।
জেলেরা জানান, মাছ শিকার করতে সমুদ্রে গিয়ে এক সপ্তাহ বা তার অধিক সময়ের জন্য ছোট-বড় আকারভেদে প্রতিটি ট্রলারে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু সাগর থেকে ফিরে এসে অধিকাংশ ট্রলারের ওই খরচ পরিমাণ মাছ বিক্রি হয়না। ফলে ফিরে আসা ট্রলারগুলোর মালিক ও জেলেদের পরবর্তী সমুদ্র যাত্রায় অনীহা তৈরি হয়েছে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিষেধাজ্ঞা শেষে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর এই দুই মাসে বিএফডিসি ঘাটে মোট মাছ নেমেছিল ৪শ ৬১.৯৪ মেট্রিক টন। যার মধ্যে ইলিশ ১শ ৬৭.৪ এবং মিশ্রিত মাছ ২শ ৯৪.৯০ মেট্রিকটন।
এ তুলনায় একই সময়ে এ বছর এখন পর্যন্ত বিএফডিসি ঘাটে মোট মাছ নেমেছে ৩শ ৮৪.৮১ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ইলিশ ১শ ১০.৩৫ মেট্রিক টন এবং মিশ্রিত মাছ ২শ ৭৪.৪৬ মেট্রিকটন। গত বছর নিষেধাজ্ঞা শেষে একমাসে ঘাটে নামা মোট মাছের তুলনায় এ বছর ৭৭.১৩ মেট্রিক টন কম মাছ অবতরণ হয়েছে।
গত বছর এই সময়ে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট থেকে সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে ২০ লাখ ৭৮ হাজার ৭শ ৬০ টাকা।
এবছর ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৫ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে যা প্রায় ৪ লাখ টাকা কম । মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের অবতরণ কম হওয়ায় মাছের দাম বৃদ্ধিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ঘাটে থাকা মৎস্য ব্যবসায়ীদের। অপরদিকে লোকসানে পড়ে ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন সমুদ্রগামী অসংখ্য জেলে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার জিএম মাসুদ শিকদার জানান, জেলেরা সাগরে গিয়ে তেমন মাছ পাচ্ছেন না। এতে অবতরণ কেন্দ্রে মাছের অবতরণ কম হচ্ছে, ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ও কমে যাচ্ছে। বর্তমানে সাগরে ইলিশ নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন জানান, আশাকরি খুব দ্রুতই আমাদের এ সংকট কেটে যাবে।