
বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ বছর দেশের মোট ২,৮৫৭টি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ৪৩০ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিজিবির বিশেষ ব্যবস্থা
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, পূজা উপলক্ষে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২৪টি বেইজ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকা, পার্বত্য অঞ্চল এবং ঘনবসতিপূর্ণ শহর এলাকায় বাড়তি টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে বিশেষভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে মোট ২,৮৫৭টি পূজামণ্ডপকে, যার মধ্যে:
- সীমান্তবর্তী এলাকা ও পার্বত্য অঞ্চলে: ১,৪১১টি পূজামণ্ডপ।
- অন্যান্য অঞ্চলে: ১,৪৪৬টি পূজামণ্ডপ।
- রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায়: ৪৪১টি পূজামণ্ডপ।
- চট্টগ্রাম মহানগরী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায়: ৬৯৪টি পূজামণ্ডপ।
- দেশের অন্যান্য স্থানে: ৩১১টি পূজামণ্ডপ।
গোয়েন্দা নজরদারি ও সমন্বিত টহল
দুর্গাপূজা উপলক্ষে যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি কার্যকরভাবে প্রতিরোধে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল চালানো হচ্ছে যাতে কোনো ধরনের চোরাচালান, অবৈধ প্রবেশ বা নিরাপত্তা বিঘ্নকারী কোনো কার্যকলাপ ঘটতে না পারে।
এছাড়াও, প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির যৌথ সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে পূজা মণ্ডপগুলোতে সমন্বিত নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শান্তিপূর্ণ উদযাপনে বিজিবির প্রতিশ্রুতি
বিজিবির মুখপাত্র মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, “বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সর্বদা জাতীয় শান্তি, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে জনগণ যেন নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে।”
দুর্গাপূজা: সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক
শারদীয় দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি বাংলাদেশে সামাজিক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অন্যতম প্রতীক। এই উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শুধু একটি সম্প্রদায়ের নয়, বরং পুরো জাতির ঐক্য ও শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয়।









