বুধবার ৩০ জুলাই, ২০২৫

বাড়ছে নদীর পানি, উপকূলীয় অঞ্চলে আবারও বন্যার শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারি বৃষ্টি অব্যাহত আছে। এতে দ্রুত বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ফলে দেশের উপকূলীয় ও পূর্বাঞ্চলে আগামী তিন দিনের মধ্যে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে, যা সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে। বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা, গোমতী, ফেনী, সাঙ্গু এবং মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুই দিন এসব নদীর অববাহিকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি এবং তৃতীয় দিনে মাঝারি-ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আগামী তিন দিন পর্যন্ত এসব নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। ফেনী জেলার মুহুরী নদী আগামী দুই দিনের মধ্যে সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার উদয় রায়হান গণমাধ্যমে জানান, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের অনেক স্থানে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর ফলে ফেনী জেলায় আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলায়ও একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। এদিকে, চট্টগ্রাম এলাকায় ভারী বৃষ্টির প্রভাবে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “টানা বৃষ্টি, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে।”

অন্যদিকে, সিলেট বিভাগের কংস নদীর পানি বাড়ছে, যাদুকাটা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। সারিগোয়াইন ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও বিপৎসীমার নিচেই আছে। এই অববাহিকায় আগামী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারী এবং তৃতীয় দিনে মাঝারি-ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট জেলার সারিগোয়াইন, সুনামগঞ্জের যাদুকাটা এবং নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানিও বাড়ছে এবং আগামী তিন দিন পর্যন্ত তা বৃদ্ধি পেতে পারে, যদিও তা বিপৎসীমার নিচেই থাকবে।

দেশের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বর্তমানে কমছে এবং আগামী দুই দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তৃতীয় দিনে বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হবে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং দুই দিন স্থিতিশীল থাকার পর পরবর্তী তিন দিনে বাড়তে পারে, তবে তা বিপৎসীমার নিচেই থাকবে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও হ্রাস পাচ্ছে এবং আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত তা স্থিতিশীল থেকে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ বর্তমানে ভারতের স্থলভাগে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় এক থেকে তিন ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন