কোনো পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর করা, পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা সরকার সমর্থন করে না উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা পরে ঘটলে টলারেট (সহ্য) করা হবে না।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, প্রথম আলো নিয়ে একটি উত্তেজনা দেখতে পাচ্ছি কয়েক দিন ধরে। গতকালও এ রকম উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল অফিসের সামনে। আজকে রাজশাহীতে তাদের অফিসে ভাঙচুর হয়েছে এবং চট্টগ্রাম ও বাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। আমাদের বক্তব্যটি হচ্ছে, কোনো গণমাধ্যম বা পত্রিকার বিরুদ্ধে যদি জনগণের কোনো অংশের অভিযোগ থাকে, ক্ষোভ থাকে, তারা সেটি প্রকাশ করতে পারে, তবে সেটি অবশ্যই শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, কোনো পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর করা, পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা সেটা আমরা সমর্থন করি না। এ ধরনের ঘটনা পরে ঘটলে টলারেট (সহ্য) করা হবে না।
যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ ইসলাম বলেন, পুলিশের দুর্বলতা ছিল বলেই ঘটনাটি সংঘর্ষের দিকে গেছে, এটা স্বীকার করছি। কিন্তু এটাও মানতে হবে যে পুলিশ একটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, পুলিশ একটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় আছে, সেই জায়গায় যখন এত এত শিক্ষার্থী নেমে এসেছে, পুলিশ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারতো। পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সংঘর্ষে জড়ায়নি। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পুলিশকে আরও সক্রিয় করতেই রদবদল করছি। কারও ব্যর্থতা থাকলে তাদেরও আমরা পরিবর্তন করবো।
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, কয়েক দিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন কলেজে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। ঢাকা কলেজে এরকম ঘটনা ঘটতে দেখেছি। আমরা বার বার আহ্বান জানাচ্ছি কোনো প্রকার উসকানিতে পা না দিতে। ছাত্ররা যেন ধৈর্য সহকারে যে কোনো সমস্যা কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বা সরকারের মধ্যে অংশীভূত হতে পারে। এর মাধ্যমে সমাধান করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, ছয়দিন আগ থেকে এর সূত্রপাত। একজন শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ও সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ থেকেই এ ঘটনা ঘটে। সেটা ছিল ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর হামলায় কারা কারা জড়িত সেটা ব্যবস্থার নেওয়া বিষয়ে আইনগত বিষয় চলমান। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই টলারেট করা হবে না।
আসিফ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করেছে সব সংঘর্ষ এড়াতে। তবে আমরা দেখেছি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাতজন ও মাহবুবুর রহমান কলেজের তিনজনের নিহতের খবর রটেছিল। এখন পর্যন্ত নিহত হওয়ার কোনো খবর আমরা পাইনি। কোনো গণমাধ্যমেও এ খবর পাইনি। তবে অনেকে আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটালো তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।