মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর, ২০২৫

টেলিকমে পুরোনো লাইসেন্সে ফেরার সুযোগ নেই, কার্যকর হচ্ছে পলিসি

রাইজিং কুমিল্লা ডেস্ক

Rising Cumilla -Posts and Telecommunications Division
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ/ছবি: রাইজিং কুমিল্লা সম্পাদিত

টেলিযোগাযোগ খাতে পুরোনো লাইসেন্স পলিসিতে ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

শনিবার (২২ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অকার্যকর এবং টেলিযোগাযোগ সেবাখাতের বিকাশে বাধা সৃষ্টিকারী আওয়ামী ‘মাফিয়াতান্ত্রিক’ লাইসেন্স রেজিমকে স্ক্র্যাপ করতে নতুন টেলিকম লাইসেন্স বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং ২০২৫’ পলিসি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দেওয়া বৈধ ও অবৈধ তিন হাজারের বেশি লাইসেন্স রিভিউয়ের আওতায় আনা যাবে।

নতুন লাইসেন্সের ফি, চার্জ এবং রেভেনিউ শেয়ারিং-এর গাইডলাইন এখনও ড্রাফট অবস্থায় আছে। এটি অংশীদার সংস্থা ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। নতুন লাইসেন্সে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

পুরানো লাইসেন্সগুলো ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, এক্সেস টু ডিভাইস এবং এক্সেস টু ফাইবার—এই তিনটিই নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের ঘরে ঘরে, ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে ফাইবার পৌঁছায়নি, মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার মাত্র ২২ শতাংশ পৌঁছেছে। ফলে ডেটা ব্যবহারের ভলিউম ভারতের তুলনায় দেশের প্রতি মাথাপিছু মাত্র ৫০ শতাংশ।

পুরানো লাইসেন্সে টেলিযোগাযোগ এখনও কানেকশনে থেকে গেছে। এখনই এই ইন্ডাস্ট্রিকে কানেকশন থেকে ডিজিটাল সার্ভিস-ভিত্তিক খাতে রূপান্তর করতে হবে। এখনও মোবাইল ফোনের বান্ডেল এবং আইএসপির প্যাকেজের উপর নির্ভর করছে খাত। এডটেক, হেলথটেক, এগ্রিটেক, ফিনটেক, লজিস্টিক্স টেকসহ নতুন স্টার্টআপ ভিত্তিক ডিজিটাল সেবা এখনও শুরু হয়নি।

আইএসপি, মোবাইল ইন্টারনেট, এনটিটিএন বা আইআইজি কোথাও কোয়ালিটি অফ সার্ভিস (QoS) ভিত্তিক ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল সেবার সূচনা হয়নি। বাংলাদেশে সিকিউর ইন্টারনেটের ধারণা এখনও স্থাপন হয়নি। অধিকাংশ আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরের ইন্টারনেট সেবা অনিরাপদ। হার্ডওয়্যার সিকিউরিটি মডিউল, প্যাম, সফটওয়্যার বা ফায়ারওয়াল নেই।

ডিজিটাল অর্থনীতির ভিত্তি সম্প্রসারিত করতে ২৬ প্রকারের লাইসেন্স বন্ধ করে সহজ ও কনভার্জ লাইসেন্স বিকল্প আনা হয়েছে। দেশের বাস্তবতা ও মনোপলি মাথায় রেখে নতুন লাইসেন্সে ৪ স্তরের লাইসেন্স রাখা হয়েছে, যা খাতে প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অপারেটিং স্কোপ বাড়াবে।

সাত স্তরের লাইসেন্সে আগে ৬ স্তর এক কোম্পানির হাতে থাকা অবৈধ প্রভাব থেকে টেলিকমকে রক্ষা করা হয়েছে। নতুন পলিসিতে স্তরায়ন কমানো হয়েছে, যাতে মধ্যস্বত্বভোগী কমে এবং সেবা সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়।
নতুন পলিসিতে ইন্টারনেটের মান ও স্পিড বেড়েছে। পুরানো বিনিয়োগকারীদের নতুন লাইসেন্স নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসা চালাতে পারবেন।

এছাড়া আইজিডব্লিউ ও আইসিএক্স-এর লাইসেন্সের আবেদন শেষ হয়ে গেছে। এসব সুইচ ও যন্ত্রপাতি অ্যান্ড অফ লাইফ সাইকেলের শেষ দিকে। তাই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা জরুরি।

নতুন পলিসিতে এনটিটিএনের জন্য ৩৫ শতাংশ, আইসিএসপির জন্য ৫১ শতাংশ এবং এমএনও-এর জন্য ১৫ শতাংশ শেয়ার দেশীয়দের সুবিধামতো ছাড়তে হবে। দেশীয়রা চাইলে ১০০ শতাংশ মালিকানা রাখতে পারবেন।

প্রাইভেট ফাইভজি ও এমভিএনও ব্যবসাও উন্মুক্ত করা হয়েছে। দেশীয় উদ্যোক্তারা চাইলে এই খাতে নতুন বিনিয়োগ করতে পারবেন।

মোটকথা, নতুন পলিসিতে টেকনোলজি ব্লক নেই, তাই ভুল বিনিয়োগ না করে নতুন ধারার টেলিকমিউনিকেশন ও ডিজিটাল সেবা খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন