অক্টোবর ১৮, ২০২৪

শুক্রবার ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

জীবন যুদ্ধে এগিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাফর

Rising Cumilla - Zafar, a student of Barisal University, is fighting for his life
ছবি: প্রতিনিধি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মেধাবী ছাত্র জাফর ইকবাল জয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর প্রথম কয়েকমাস তিনি নানা ধরনের কাজ করতেন। তা দিয়ে লেখাপড়া ও নিজের থাকা- খাওয়ার খরচ চালাতেন। তিনি প্রতি মাসে এই যৎসামান্য টাকা দিয়ে সব দিক দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না। সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব তা দিয়ে পড়াশোনার খরচ বহনের পাশাপাশি দিয়েছেন একটা টি স্টল।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি গেট সংলগ্ন বরিশাল- পটুয়াখালী মহাসড়ক এর পাশে তার দোকান। তার দোকানে হরেক রকমের চা রয়েছে। কফি সহ প্রায় পাঁচ রকমের চা পাওয়া যায় তার দোকানে।এদের মধ্যে গরুর দুধের চা, লেবু চা, মালটা চা বেশ জনপ্রিয়। তিনি বরিশালের রুপাতলী থাকলেও তার চায়ের দোকান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে টি স্টল দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে লোকসমাগম বেশি, সবাই পরিচিত ভাই, বন্ধু ও সহপাঠী। ভালোই বিক্রি হয় প্রতিদিন। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিজের বন্ধু ও শ্রদ্ধেয় স্যার ম্যামরা আসে আমার দোকানে চা খেতে। এখানে কফি সহ আছে প্রায় পাঁচ রকমের চা। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় দুধ চা রং চা। এর মধ্যে দুধ চা ১০ টাকা, রং চা ৫ টাকা দাম। দাম অনুযায়ী চায়ের স্বাদ অসাধারণ।

এক সন্ধ্যায় আলাপ চারিতায় জাফর ইকবাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর থেকে নানারকম ছোট বড় কাজ করেছি।টিউশনি নেয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি। এরপর নিজের কিছু করার চেষ্টা।কোন কাজই ঠিক মতো ধরতে পারিনি।ভেবেছিলাম কম্পিউটার কম্পোজ সহ অনলাইনে টুকটাক কাজ করার একটা দোকান দেবো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এরকম দোকানের অভাব নেই। পরেই চায়ের দোকান দিয়েছি এবং গতানুগতিক চায়ের দোকান থেকে একটু স্বাদ, মান ও দাম আলাদা করার চেষ্টা করেছি।

সরজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়কের পাশেই দোকানটিতে নানারকম চায়ের নাম ও দাম সহ একটি প্রাইসলিস্ট টাঙ্গানো। কাস্টমার বসার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা ও সুযোগ সুবিধা। বিকাল ৩ থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত চায়ের দোকানে নানা বিভাগের ছাত্রদের আড্ডা দেখা যায়। দোকানের বয়স বেশিদিন না হলেও ইতিমধ্য বেশ জমে উঠেছে।

চা খেতে আসা স্থানীয় ও ছাত্ররা জানান এই দোকানে বেশ কয়েক রকমের চাওয়া পাওয়া যায়। স্বাদের দিন দিয়েও অনন্য। অন্যদের চায়ের থেকে আলাদা স্বাদ পাওয়া যায়, তাই চায়ের স্বাদ ভালো হওয়ায় নিয়মিত কাস্টমার চাপ রয়েছে।

টি স্টল দেওয়ার পর ভালোই আয় করছেন এখন। নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতে পারছেন।

ইন্টারনেট ঘেঁটে নানারকম চা তৈরীর কৌশল রপ্ত করার পাশাপাশি স্বাদ বৃদ্ধি নিয়েও নিয়মিত কাজ করেন। এই চায়ের দোকান থেকেই তিনি তার লেখাপড়া শেষ করে ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরণ করতে চান