সোমবার ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

“জাপানে কাজের সুযোগ পাচ্ছে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি”

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

"জাপানে কাজের সুযোগ পাচ্ছে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি"/ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপানের ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস’ (এনবিসিসি)।
এই বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে সংগঠনটির ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
৬৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত জাপানি ফেডারেশন এনবিসিসি সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (MoI) স্বাক্ষর করেছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণের জন্য প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন ও কর্মসংস্থানের একটি কাঠামো তৈরি করা। এই চুক্তির আওতায় আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (TITP) ও স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (SSW) কর্মসূচির মাধ্যমে এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিনিধিদল জানায়, প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২০২৭ সালে ছয় হাজার এবং ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকবে নির্মাণ, সেবা, অ্যাভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে। এছাড়া ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং শিল্পেও দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন বাড়বে।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। এনবিসিসি প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বৈঠকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি আছে কি না তা জানতে চান। এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা জানান, “গত মার্চে কেন্দ্রগুলো দেখেছিলাম, এখন এসে বিশাল পরিবর্তন দেখছি। মাত্র সাত মাসে প্রশিক্ষণে অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট এবং আগামী বছর থেকেই দুই হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে পারব বলে আশাবাদী।” তবে তিনি প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
ভাষাগত দক্ষতাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাপানি ভাষা শেখানোর জন্য ভার্চুয়াল ক্লাস চালু করা যেতে পারে। জাপান থেকে অনলাইনে শিক্ষক পাঠানো বা এখানকার প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও বিবেচনা করা যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশি নারীরা অত্যন্ত পরিশ্রমী ও যত্নশীল। বিশেষ করে কেয়ারগিভিং সেক্টরে তারা দারুণভাবে কাজ করতে পারে। সঠিক প্রশিক্ষণ ও ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করলে জাপানের কেয়ার সেক্টরে তারা অনন্য ভূমিকা রাখবে।”
এনবিসিসি প্রতিনিধিদল জানায়, আগামী কয়েক বছরে জাপানে চার লাখেরও বেশি নার্সের প্রয়োজন হবে, যার একটি বড় অংশ বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, সরকার জাপানে কর্মী প্রেরণের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং সমস্যাগুলো সমাধানে মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন