মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না থাকলে গণনা হবে না পোস্টাল ব্যালটের ‘ভোট’

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

ছবি: রাইজিং কুমিল্লা সম্পাদিত

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদান প্রক্রিয়া নিয়ে একটি বিস্তারিত পরিপত্র জারি করেছে। ঘোষণাপত্রে যথাযথ স্বাক্ষর না থাকলে পোস্টাল ব্যালটের ভোট বাতিল হবে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের পূর্ণাঙ্গ নিয়মাবলি।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ইসির উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এই পরিপত্রে পোস্টাল ভোটিংয়ের পূর্ণাঙ্গ নিয়মাবলি তুলে ধরা হয়।

১. ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না থাকলে ভোট বাতিল

পরিপত্রের মূল নির্দেশনানুসারে, রিটার্নিং অফিসার ভোটের গণনা শুরু করার আগে প্রাপ্ত খামের ভেতরে থাকা ঘোষণাপত্রটি পরীক্ষা করবেন।

  • যদি ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর না থাকে, তবে ব্যালট পেপারের খামটি আর না খুলেই সেটি বাতিল হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।

  • ঘোষণাপত্র ছাড়া কোনো পোস্টাল ব্যালট কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

২. বিদেশে বসে পোস্টাল ভোট: নিবন্ধন থেকে ভোট পর্যন্ত নির্দেশনা

বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভোটারদের জন্য এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ আরও সহজ করতে বিস্তারিত নিয়মাবলি প্রকাশ করা হয়েছে।

নিবন্ধন পদ্ধতি

বিদেশে অবস্থানরত ভোটাররা ‘Postal Vote BD’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালটের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

  • Google Play Store বা App Store থেকে ‘Postal Vote BD’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে।

  • ভোট দিতে যে দেশ থেকে আবেদন করা হচ্ছে, সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।

  • OTP, Liveliness ও NID যাচাইয়ের মাধ্যমে নিবন্ধন নিশ্চিত করা হবে।

  • বিদেশে অবস্থানকালীন ঠিকানাটি অবশ্যই যথাযথ ও প্রমাণযোগ্য হতে হবে।

আবেদনকারীর তথ্য যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সংশ্লিষ্ট ভোটারের বিদেশের ঠিকানায় ব্যালট পেপার প্রেরণ করবে।

ভোট প্রদানের নিয়ম

প্রতীক বরাদ্দের পর অ্যাপের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা দেখে ভোটাররা প্রাপ্ত ব্যালটে ভোট দেবেন এবং তা রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন।

  • ব্যালটে প্রতিটি প্রতীকের পাশে থাকা ফাঁকা ঘরে (✓) বা (×) চিহ্ন দিতে হবে।

  • ঘোষণাপত্রে অবশ্যই ব্যালট পেপারের ক্রমিক নম্বর, ভোটারের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখে স্বাক্ষর করতে হবে।

  • নিরক্ষর বা অক্ষম ভোটার বৈধ একজন ভোটারের সহায়তায় সত্যয়নপত্র পূরণ করতে পারবেন।

  • প্রেরণ প্রক্রিয়া:
    • ব্যালট পেপারটি ছোট খামে রেখে বন্ধ করতে হবে।

    • এরপর ঘোষণাপত্রসহ এটি বড় খামে ঢুকিয়ে ডাকযোগে পাঠাতে হবে।

    • এই ফিরতি খামে ডাকমাশুল সরকারের পক্ষ থেকেই পরিশোধিত থাকবে।

  • আবেদন থেকে ব্যালট প্রেরণ এবং রিটার্নিং অফিসারের গ্রহণ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

৩. ব্যালট গ্রহণ, সংরক্ষণ ও গণনা

পোস্টাল ব্যালট গ্রহণ ও গণনার ক্ষেত্রেও রিটার্নিং অফিসারকে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

ব্যালট গ্রহণ ও সংরক্ষণ

  • রিটার্নিং অফিসার ডাকযোগে প্রাপ্ত খামগুলোর QR কোড স্ক্যান করে রেকর্ড রাখবেন।

  • স্বাক্ষরবিহীন ঘোষণাপত্রযুক্ত খামগুলো গণনা না করে বাতিল হিসেবে সংরক্ষণ করবেন।

  • বৈধ ঘোষণাপত্রসহ খামগুলো আলাদা বাক্সে গণনার জন্য রাখবেন।

পোস্টাল ব্যালট গণনা

  • রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি পৃথক গণনা কক্ষ থাকবে।

  • গণনার সময় প্রার্থী, এজেন্ট, গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকতে পারবেন।

  • বৈধ ভোটগুলো প্রার্থীভিত্তিক আলাদা করে গণনা করা হবে।

  • চিহ্নের ব্যবহার অস্পষ্ট হলে সেই ব্যালটটি বাতিল হবে।

  • গণনা শেষে সাধারণ কেন্দ্রের মতোই ফলাফল প্রকাশ করা হবে। পোস্টাল ব্যালটের ভোটের হিসাব একীভূত না করলে কোনো অবস্থাতেই চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা যাবে না।

আরও পড়ুন