
কুমিল্লা লালমাই উপজেলায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায় গেছে, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতনের শিকার শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবররা বৃদ্ধ আবাদ উল্যাহকে সালিশ বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে শনিবার রাত ১০টায় গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চা দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসে। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। অভিযুক্তের পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা করে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত ২টায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসলে সালিশ বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সালিশ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ও ওই এলাকার বাসিন্দা ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিতে রায় দিয়েছিল বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে সর্দারের কাছে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার দিবাগত রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিশ বৈঠক সমাপ্ত হয়ে যায়।’
স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।