কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আলিপুর গ্রামে শাড়ি শিল্পের ঝকমকে আলোয় জ্বলজ্বল করছে গ্রামের জীবন। শাড়ি মেশিনের ঝিনঝিন শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা গ্রাম। এক সময়ের নিরুদ্দেশ বেকারত্ব এখন অতীত। কারখানার শ্রমিকরা সুখের স্বপ্ন বুনছেন, গ্রামের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন।
আলিপুরে শাড়িতে নকশা তোলার কাজ করে অনেক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। আঁড়ির নকশা, পুথি, পাথর, চুমকি সহ নানা সুঁচিকর্মের জটিল কাজে পারদর্শী হয়ে উঠেছে গ্রামবাসী। একটি শাড়ি জমকালো ও মোহনীয় করতে প্রথম ধাপে করতে হয় আঁড়ির নকশা। তারপর পুথি, পাথর, চুমকি ছাড়াও করতে হয় আরো অনেক সুঁচিকর্ম। দিন দিন এর চাহিদা বাড়তে থাকায় বর্তমানে ওই গ্রামে ৫০ টিরও বেশি শাড়ি কারখানা গড়ে উঠেছে।
আলিপুরের গাজী আবদুল বারেক প্রথম এই পেশায় হাত দিয়ে অনেককে উদ্বুদ্ধ করেন। আজ তার উদ্যোগে গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এই শিল্প। দড়িচর, নোয়াগাঁও, ভিটি কালমিনাসহ আশপাশের গ্রামের মানুষেরও জীবনে এসেছে নতুন আলো। প্রত্যেকের বাড়িতেই টিনশেড বিল্ডিং। প্রত্যেকের মুখেই স্বাচ্ছন্দের হাসি।
ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেকার সময় কাটানোর মতো লোক এ গাঁয়ে এখন আর পাওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে কারখানা শ্রমিক আলমগীর বলেন, প্রতি সপ্তাহে এক জন শ্রমিক ৫-৮ টি শাড়িতে নকশা তুলে দুই/আড়াই হাজার টাকা রোজগার করতে পারছেন। আলিপুরের শাড়ি শিল্পীরা সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন।
এ বিষয়ে আলীপুর গ্রামের একটি কারখানার মালিক লিটন বলেন, ঢাকার বড় বড় শপিং কমপ্লেক্সের দোকানের মালিকদের অর্ডার অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। তাদের দেওয়া ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করে তাদের মাল ডেলিভারী দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, গ্রামের ছেলে মেয়েরা এ কাজ করে সবাই এখন দক্ষ কারিগর হয়ে ওঠেছে। সবাই এখন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকছে।