
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারিভাবে গম আমদানি শুরু করলো বাংলাদেশ। সরকার টু সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে আমদানি করা প্রায় ৫৭ হাজার টন গমের প্রথম চালান নিয়ে একটি জাহাজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রথম চালানের আগমন: বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এমভি নর্স স্ট্রাইড নামের জাহাজটি ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন (মে. টন) গম নিয়ে শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙরে নোঙর করে। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে জিটুজি ভিত্তিতে আমদানি করা গমের প্রথম চালান। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকার মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করবে। সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের (ইউএসডিএ) মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী এই গম আমদানি কার্যক্রমটি চলমান রয়েছে।
জাহাজে থাকা গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। প্রথম চালানের ৫৬ হাজার ৯৫৯ মে. টন গমের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৭০ মে. টন চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৮৯ মে. টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর প্রেক্ষাপটে দেশটি থেকে গম আমদানির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান এগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল-এর কাছ থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে এই গম কেনা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি টন গমের মূল্য ধরা হয়েছে ৩০২ মার্কিন ডলার।
গত ২৩ জুলাই ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করে। তবে চুক্তিতে ১০ শতাংশ কম-বেশির শর্ত থাকায় মোট ২ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন গম দেশে আসবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের গম রফতানিকারক সমিতির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৭ লাখ টন গম আমদানি করবে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, “অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানিতে প্রতি টনে ২৫ থেকে ৩০ ডলার বেশি খরচ হচ্ছে।”








