
শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে এবং শুরু হয়েছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। আগামী রোববার মহাষষ্ঠী এবং পরদিন সোমবার মহাসপ্তমীতে শুরু হবে মূল উৎসব।
ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনার মহাউৎসব, যা শুরু হয়েছিল রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় চণ্ডীপাঠ, ঢাক–কাঁসর ও শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে। এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে আগামী ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে।
বর্তমানে মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা আজই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণত লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। তবে এই দুর্গাপূজার মধ্যে আবহাওয়া কেমন থাকবে, সে বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, লঘুচাপটি মূলত ভারতের ওডিশা উপকূলে অবস্থান নিয়েছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হলে এর কিছুটা প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলে পড়তে পারে। তবে দেশের বেশির ভাগ স্থানে এর প্রভাব ততটা নাও পড়তে পারে।
তিনি আরও জানান, এর আগে চলতি মাস এবং গত আগস্ট মাসেও ওডিশা উপকূলে কয়েকটি লঘুচাপ হয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর প্রভাব তেমন বাংলাদেশের উপকূলে পড়েনি। তবে এবার বিশেষ করে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে লঘুচাপের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
বৃষ্টির পূর্বাভাস (২৬-৩০ সেপ্টেম্বর)
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল শনিবার দেশে বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা বাড়তে পারে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
এর সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমবে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শনিবারের (২৭ সেপ্টেম্বর) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকায় দু-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিনের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রাও সামান্য কমবে।
রোববারের (২৮ সেপ্টেম্বর, মহাষষ্ঠী) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশালে দু-এক জায়গায় বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবারের (২৯ সেপ্টেম্বর, মহাসপ্তমী) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকবে।
মঙ্গলবারের (৩০ সেপ্টেম্বর) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশালে দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সেদিন সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বর্ষণ এবং সমুদ্র উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের মতে, আগামী রোববার (ষষ্ঠী) থেকে পরের দুই দিন (অষ্টমী) আবহাওয়া মোটামুটি শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে দেশের কোনো কোনো স্থানে বৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, ১ অক্টোবর: বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে। তবে ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার, বিজয়া দশমী) এবং ৩ অক্টোবর: এই দুই দিন বৃষ্টি অনেকটাই বাড়তে পারে। ২ অক্টোবর রাজশাহী বিভাগ বাদ দিয়ে দেশের প্রায় সব বিভাগেই কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে। কারণ ২ তারিখ থেকে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আগামী ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হতে পারে।