জানুয়ারি ৭, ২০২৫

মঙ্গলবার ৭ জানুয়ারি, ২০২৫

দেশব্যাপী ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভের ডাক দিলো জোবায়েরপন্থিরা

Jobber supporters have called for nationwide protests on January 10
ছবি: সংগৃহীত

তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের গ্রেপ্তার, বিচার ও নিষিদ্ধ করার দাবিতে ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন শুরা–ই–নেজাম বা বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা। তারা বলেন, গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে হামলায় সাদপন্থিরা জড়িত।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে কাকরাইল মসজিদ প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন তাবলিগ জামাতের জোবায়েরপন্থীরা। এসব দাবি মানা না হলে ২৫ জানুয়ারি দেশের সব পর্যায়ের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের নিয়ে সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে এর আগেও সাদপন্থিরা হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেন জোবায়েরপন্থি হিসেবে পরিচিত মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। তিনি বলেন, ২০১৮ সালেও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার বিচার হলে ২০২৪–এর ডিসেম্বরে হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটত না। এবারও যদি হামলাকারীরা ছাড় পেয়ে যায়, তবে ভবিষ্যতে আবারও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সাদপন্থিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ‘অপশক্তির যোগসাজশ’ আছে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নাজমুল হাসান কাসেমী।

তাবলিগ জামাতের একটি পক্ষ জোবায়েরপন্থীদের সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক । তিনি বলেন, ‘এখানে তারা হেফাজতের নেতা হিসেবে নয়, আলেম-ওলামা হিসেবে এসেছেন। তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম যদি ইসলাম ধর্মের কাজ হয়ে থাকে, তবে কোরআন ও সুন্নাহর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আলেমরাই দেবেন। তাবলিগের দুই পক্ষের সমস্যা সমাধানে আলেমরা মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন। সরকারও চেষ্টা করছে।’

মামুনুল হক আরও বলেন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা ও হত্যার শাস্তি হওয়া উচিত। তাবলিগের কাজ নিয়ে ভারতের একজন ব্যক্তির বিতর্কিত মন্তব্যে সে দেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের এ সমস্যা যেন বাংলাদেশে টেনে আনা না হয়। এখন বাংলাদেশে সবাই মিলেমিশে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে যারা হত্যায় জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। হত্যাকাণ্ডের বিচার বিচারের জায়গায় আর আলোচনা আলোচনার জায়গায়।

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে প্রথম পর্বের ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, প্রথম পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠানের কাজ চলমান। এটি যথাসময়ে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুর হক উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে জোবায়েরপন্থিদের সঙ্গে সাদপন্থিদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাদ কান্ধলভীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক শ জনকে আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় হত্যা মামলা করেন জোবায়েরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এস এম আলম নামের এক ব্যক্তি। এ মামলায় ১৯ ডিসেম্বর রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানার মুফতি মুয়াজ বিন নূরকে রাজধানীর খিলক্ষেতের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।