মার্চ ১২, ২০২৫

বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

চুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

প্রতীকী ছবি/সংগৃহীত

চুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, এমন কথা শুনলে অনেকেই অবাক হবেন। সাধারণত আমরা জানি, চুন খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি স্বাস্থ্যকরও হতে পারে।

এই চুন খাওয়ার সঠিক উপায় জানা জরুরি, তা না হলে উপকারের বদলে ক্ষতিই হবে। মূলত, চুন ক্যালসিয়াম ও অক্সিজেন দিয়ে তৈরি একটি রাসায়নিক। যখন এই চুন পানিতে মিশে যায়, তখন তা স্লেকড লাইম অর্থাৎ ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডে পরিণত হয়। যাকে সহজ ভাষায় চুনের পানি বলা হয়।

পানের দোকানে পান-সুপারিসহ পাওয়া যায় এমন চুনও খেয়ে থাকেন অনেকে। আয়ুর্বেদে চুন খাওয়ার উপকারিতা ও পদ্ধতি দুটিই আলোচনা করা হয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—

কিভাবে চুন খেতে হয়

চুনের উপকারিতার জন্য চুন খেতে চাইলে অবশ্যই এটি খাওয়ার সঠিক উপায় জানতে হবে। ডায়েশিয়ানদের মতে, গমের দানার সমান চুন খাওয়া যায়। এই পরিমাণে ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই অল্প পরিমাণে এই চুন এক সপ্তাহ পরপর এক সপ্তাহ, তারপর দুই সপ্তাহ, তারপর তিন সপ্তাহ এবং তারপর চার সপ্তাহ পরপর খেতে হবে। এর পর একটানা ছয় মাস চুন খাওয়া উচিত নয়।

চুন খাওয়ার উপকারিতা

  • হাড় ও দাঁত মজবুত করে: চুন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। যার কারণে এটি অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা দূরে রাখতে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে। শুধু তাই নয়, চুনের কারণে দাঁতও মজবুত থাকে।
  • হজমে সাহায্য করে: চুন খাওয়া খাবার হজমে সাহায্য করে। এ ছাড়া গ্যাস অম্বলেও সহায়তা করে এই চুন।
  • ব্যথা থেকে মুক্তি: ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে জয়েন্টে ব্যথার অভিযোগ থাকলে চুন খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: চুনে অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে, যার কারণে এটি শরীরকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
  • শিশুদের উচ্চতা বাড়ায়: শিশুদের যদি দই বা ডালের সঙ্গে এক দানার সমান চুন খাওয়ানো হয়, তবে এটি শুধু তাদের হাড় মজবুত করবে না, উচ্চতা বাড়াতেও সাহায্য করবে।
  • হার্টের স্বাস্থ্যে: চুন ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। যা উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব কমাতে কার্যকর। যার কারণে চুন খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে। আর হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • ওজন কমাতে: বেশি খেলে ওজন বাড়তে থাকলে এক গ্লাস পানিতে গমের দানার চেয়ে ছোট চুন মিশিয়ে পান করুন। চুনে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড, যা শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়। যার কারণে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়ে যায় এবং কম চর্বি জমে।

কিভাবে চুন খাবেন

চুন পানি, দই ও ডালের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করা যায়। এতে চুনের কার্যকর উপকারিতা পাওয়া যাবে।

কখন চুন খাওয়া ক্ষতিকর

চুন খাওয়া উপকারী হলেও খাবারে চুনের পরিমাণের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। অনেকের চুনে অ্যালার্জিও হতে পারে। কারো যদি টক ফলের অ্যালার্জি থাকে তাহলে তার চুন খাওয়া উচিত নয়। এটি করলে শ্বাসকষ্ট, ফুলে যাওয়া, আমবাত হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। আসলে, চুন অ্যাসিডিক এবং এর কারণে বমি, বমি বমি ভাব ও খাবার গিলতে অসুবিধা হতে পারে।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস