
মেট্রোরেল যাত্রীদের জন্য একটি বড় সুখবর। এখন থেকে ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব ধরনের অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মেট্রোরেলের স্থায়ী কার্ড—র্যাপিড পাস এবং এমআরটি পাস—রিচার্জ করা যাবে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) জানিয়েছে, আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে এই সেবা চালু হবে। সেবাটির উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক, সেতু ও রেল) শেখ মইনউদ্দিন।
ঢাকা ট্র্যান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) ঘরে বসেই স্থায়ী কার্ড রিচার্জের জন্য কয়েকটি সহজ ধাপ নির্ধারণ করেছে।
কীভাবে করবেন অনলাইন রিচার্জ?
ডিটিসিএর তৈরি নতুন ব্যবস্থায় রিচার্জের ধাপগুলো নিম্নরূপ:
১. প্রথমে ডিটিসিএর ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধন করে লগইন করতে হবে।
২. ‘রিচার্জ’ অপশনে গিয়ে বেছে নিতে হবে র্যাপিড পাস নাকি এমআরটি পাস রিচার্জ করা হবে।
৩. ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যেকোনো পেমেন্ট মাধ্যম নির্বাচন করে টাকা পরিশোধ করতে হবে।
৪. পেমেন্ট সফল হওয়ার পর স্টেশনে স্থাপন করা নতুন যন্ত্রে (এভিএম) কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য: অনলাইন রিচার্জের এই নতুন সফটওয়্যারে টাকা সংরক্ষিত থাকবে। তাই কার্ডের তথ্য হালনাগাদ করার জন্য সাধারণ গেটে টাচ না করে আলাদাভাবে এভিএম যন্ত্রে স্পর্শ করতে হবে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মেই গেটে টাচ করে যাতায়াত করা যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা ও ফি
পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।
অনলাইনে রিচার্জ করা টাকা এভিএম মেশিনে স্পর্শ না করা পর্যন্ত ‘অপেক্ষমাণ’ অবস্থায় থাকবে এবং তিন মাস পর্যন্ত বৈধ থাকবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্ড স্পর্শ না করলে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফিরে যাবে, তবে ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে রাখা হবে।
গ্রাহক চাইলে সাত দিনের মধ্যে রিচার্জ ফেরত নিতে পারবেন—সেক্ষেত্রেও একই হারে ১০ শতাংশ ফি প্রযোজ্য হবে।
স্টেশনে এভিএম যন্ত্র স্থাপন
ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, গত সোমবার থেকে স্টেশনগুলোতে এভিএম যন্ত্র বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ২১ ও ২২ নভেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে প্রতিটিতে দুটি করে মোট ৩২টি যন্ত্র স্থাপন করা হবে।
যাত্রী এবং ছাড়ের তথ্য
এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করলে যাত্রীরা ১০ শতাংশ ছাড় পান। বর্তমানে মেট্রোরেলের ৫৫ শতাংশ যাত্রী এই কার্ড ব্যবহার করেন, আর ৪৫ শতাংশ যাত্রী নেন একক যাত্রার কার্ড।
পরিবহন ক্ষমতা ও বর্তমান সময়সূচি
পরিবহন সক্ষমতা: পূর্ণ সক্ষমতায় প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পরপর ট্রেন চললে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন সম্ভব। কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে দৈনিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
বর্তমান যাত্রী: বর্তমানে দিনে গড়ে পৌনে পাঁচ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন।
বর্তমান সময়সূচি: গত অক্টোবরে সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে:
উত্তরা উত্তর স্টেশন: প্রথম ট্রেন সকাল ৬টা ৩০ মিনিট, শেষ ট্রেন রাত ৯টা ৩০ মিনিট।
মতিঝিল: প্রথম ট্রেন সকাল ৭টা ১৫ মিনিট, শেষ ট্রেন রাত ১০টা ১০ মিনিট।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: আগামী মাসে ট্রেনের মধ্যবর্তী সময় দুই মিনিট কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দৈনিক যাত্রীসংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছে।








