
আমাদের রান্নাঘরের এক অপরিহার্য উপাদান। গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতে এক চামচ ঘি পড়লে তার স্বাদ যেন অমৃত। শুধু ভাত কেন, ঘিয়ে ভাজা মুচমুচে পরোটা, সুস্বাদু হালুয়া, অথবা জিভে জল আনা খিচুড়ির স্বাদকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় এই দুগ্ধজাত উপাদানটি। এমনকি সামান্য একটু ঘি মিশিয়ে নিলে সাধারণ তরকারির স্বাদও হয়ে ওঠে অসাধারণ।
তবে ঘিয়ের উপকারিতা কি কেবলই খাবারের স্বাদ বাড়ানোয় সীমাবদ্ধ? একদমই নয়! প্রাকৃতিক পুষ্টি আর ভিটামিনে ভরপুর এই উপাদানটির রয়েছে একগুচ্ছ স্বাস্থ্যগুণ। বিশেষত ত্বকের যত্নে ঘি অসাধারণ কাজ করে।
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার: এতে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও গুড ফ্যাট ত্বককে করে তোলে আর্দ্র ও পুষ্ট। শীতকালে ত্বক বা ঠোঁট ফাটলে অল্প ঘি লাগালেই তা ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে।
উজ্জ্বলতা ও দাগছোপ দূর: এটি ত্বকের দাগছোপ দূর করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
খাঁটি ঘি, বেশি উপকার: ঘি যত খাঁটি হবে, এর উপকারিতাও তত বেশি হবে।
ত্বকের যত্নে গরুর দুধের ঘি না কি মহিষের দুধের ঘি?
ঘি তৈরিতে অনেকেই ব্যবহার করেন গরুর দুধ, আবার কেউ কেউ পছন্দ করেন মহিষের দুধের ঘি। কিন্তু যখন প্রশ্ন ওঠে ত্বকের যত্নের, তখন কোন ঘি বেশি উপকারী? আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই দুই ধরনের ঘিয়ের উপকারিতা—
| বৈশিষ্ট্য | গরুর দুধের ঘি | মহিষের দুধের ঘি |
| উপাদান | ভিটামিন A, D, E এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট | ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস |
| ত্বকের উপকার | ফ্রি-র্যাডিকালের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। | ত্বকে প্রাকৃতিক জেল্লা এনে দেয়। |
| ফ্যাটের পরিমাণ | মহিষের দুধের তুলনায় কম। | অনেক বেশি। এতে ক্রিমের ভাগ বেশি থাকে। |
| ত্বকে অনুভূতি | হালকা, সহজে ত্বকে মিশে যায়। শুষ্ক ত্বকের জন্য উপকারী। | অপেক্ষাকৃত ঘন ও ভারী। গভীরে ময়েশ্চারাইজাইং-এর জন্য উপযোগী। |
| বিশেষ সুবিধা | চামড়া উঠলে বা এগজিমার মতো সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী। সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী। | শুষ্ক ত্বকের জন্য গভীরে ময়েশ্চারাইজাইং করতে দারুণ। |
| যাদের জন্য নয় | সাধারণত সবার জন্য উপযোগী। | ব্রণ বা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয়। রোমছিদ্র বন্ধ করে ব্রণ বাড়াতে পারে। |
ত্বকের যত্নে বিজয়ী কে?
সব দিক বিবেচনা করলে, ত্বকের যত্নের জন্য গরুর দুধের ঘি সবচেয়ে নিরাপদ। এর হালকা গঠন ত্বকের সঙ্গে সহজে মিশে যায়। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী।
অন্যদিকে, মহিষের ঘি ভারী হওয়ার কারণে তা তৈলাক্ত বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য আদর্শ নয়।
তাই, শীতকালে আপনার ত্বকের পুষ্টি ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে, প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গরুর ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক না হয়, তবে মহিষের ঘি-ও ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র : এই সময়









