
দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে এখন এক অন্যরকম দৃশ্য। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির যুগেও, কিছু কৃষক ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে চাষাবাদে ফিরে যাচ্ছেন। বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন তার জমিতে গরুর পরিবর্তে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, বাজারে গরুর দাম অনেক বেশি হওয়ায় তার পক্ষে গরু কিনে চাষাবাদ করা সম্ভব নয়। তাই তিনি দুটি ঘোড়া কিনেছেন।
তিনি জানান, “এক জোড়া গরু কিনতে গেলে খরচ পড়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা। সেই তুলনায় ঘোড়ার দাম অনেক কম, ২০-২৫ হাজার টাকায় এক জোড়া ঘোড়া কেনা যায়।”
শুধু নিজের জমিতেই নয়, আশেপাশের কৃষকদের জমিতেও হাল চাষ করে বাড়তি আয় করছেন ইসমাইল। প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে তিনি নেন ৫০০ টাকা। প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই বিঘা জমি চাষ করা সম্ভব।
ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের সুবিধা সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকরা জানান, ঘোড়ার লাঙল দিয়ে জমি গভীরভাবে চাষ করা যায়। ফলে জমি সমান হয় এবং পানি ধরে রাখা সহজ হয়।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুন অর-রশীদ বলেন, “ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য এখন দিনাজপুর জেলার সবগুলো উপজেলাতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আধুনিকতার এ যুগে বাস্তবেই ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কৃষক।”
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া জানান, “কৃষকেরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা অপ্রচলিত একটা বিষয়। তবে কৃষক ইসমাইল হোসেন নিজের প্রয়োজনে বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বা মই দেন।”
কৃষি বিভাগ সব সময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদের পরামর্শ দেয় বলে তিনি জানান।