শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কুমিল্লার হোমনায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারে হামলা-অগ্নিসংযোগ

রাইজিং ডেস্ক

Attack and arson on shrine in Homna, Comilla, with announcements made over microphone
কুমিল্লার হোমনায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাজারে হামলা-অগ্নিসংযোগ/ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার হোমনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারটি মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে এসব হামলা চালায়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধরা কফিল উদ্দিন শাহ এবং হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন দেয়, পাশাপাশি কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম নিয়ে একটি ‘আপত্তিকর’ পোস্ট করা হয়। এই ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে হোমনা থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করে এবং ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।

ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে ধর্মীয় কটূক্তির ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও, বৃহস্পতিবার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা চালায়। দুটি মাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেন, যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে উসকানি দিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা গণমাধ্যমকে জানান, ধর্মীয় অবমাননার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল, যার জের ধরে মাজারে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা এবং ইসলামী যুব সেনার নেতা শরীফুল বলেন, গ্রেপ্তারকৃত যুবক দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিচ্ছিল এবং তারা তার ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, জনদাবির মুখে যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে, কিন্তু এর পরেও বিক্ষুব্ধরা এই হামলা চালিয়েছে।

আরও পড়ুন