কুমিল্লা নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়া এলাকার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা আলম দম্পতির বাসায় শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর বাথরুমে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) নিয়ে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় গৃহকত্রী ফারহানাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
জানা যায়, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা ইসলামের বাসায় কয়েক বছর ধরে কাজ করছে সুমি আক্তারের (৯)। জাঙ্গালিয়া এলাকার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা আলম দম্পতির বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করে আসছে সে। প্রায়ই তার উপর চালানো হতো নির্যাতন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রায়ই ওই বাসা থেকে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। মঙ্গলবার রাতে দীর্ঘ সময় ধরে কান্নার শব্দ শুনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, নগরীর জাঙ্গালিয়া এলাকার রক্তিম হাউজ নামের একটি বাসায় মঙ্গলবার রাতে শিশু গৃহকর্মী সুমি আক্তারের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাসার লোকজন ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশে খবর দেয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একই ভবনের একটি ফ্ল্যাটের মালিক থেকে চাবি নিয়ে ঘরের তালা খুলে বাইরে থেকে আটকানো বাথরুমের ছিটকিনি খুলে শিশুটিকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সুমির চোখ, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নির্যাতীত শিশু জানায়, তার বাবা-মা নেই, বাড়ি কোথায় তাও জানা নেই। অবুঝ অবস্থায় সে এই বাসায় কাজ করে আসছে। প্রায় প্রতিদিন কারণে-অকারণে মেডাম (গৃহকত্রী) তার উপর নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কাঠ দিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে বাসায় তালা দিয়ে তারা চলে যায়। রাতে দীর্ঘক্ষণ ধরে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে প্রতিবেশিরা পুলিশে খবর দেয়।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, গৃহকর্মীর বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তার গৃহকর্ত্রী তার মায়ের মাধ্যমে ৪ বছর বয়সে গৃহকর্মী সুমিকে এ বাসায় এনেছিল। ৫ বছর আগে গৃহকর্ত্রীর মা মারা গেছেন, তাই গৃহকর্মীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে ওসি জানিয়েছেন।
এদিকে বুধবার হাসপাতালে ওই শিশুর খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে চিকিৎসক-কর্মচারী ও দালালদের হাতে লাঞ্ছিত হন যমুনা টেলিভিশনের কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান ও ক্যামেরাপার্সন।