নভেম্বর ২৮, ২০২৪

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

কুমিল্লায় বায়োফক্স পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে দেশী টেংরা ও কৈ মাছ

কুমিল্লায় বায়োফক্স পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে দেশী টেংরা ও কৈ মাছ
কুমিল্লায় বায়োফক্স পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে দেশী টেংরা ও কৈ মাছ। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা নগরীর কাপ্তান বাজারে বাসা-বাড়িতে বায়োফক্স পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে দেশী কৈ ও টেংরা মাছের। বাংলাদেশ হকি দলের সাবেক খেলোয়াড় কাজী মো. আনোয়ারুল হক তার বাসার সামনে মাছ চাষ করছেন। তিনি পরিবারের চাহিদা মেটানোর সঙ্গে স্বজনদের দিচ্ছেন এবং বিক্রি করছেন। অনেকে তার মাছ চাষ দেখতে আসছেন। তার দেখাদেখি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে।

কাপ্তান বাজার মাজার সংলগ্ন খোশনেয়ারা হাউজ এ থাকেন কাজী মো. আনোয়ারুল হক। পরিবারের চার ভাই চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। খেলোয়ার কোটায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। অবসরে এসে ঠিকাদারি করছেন। সঙ্গে বাসায় মাছ ও গোমতীর পাড়ে সবজি চাষ করছেন। ভোরে ফজর পড়ে দিন শুরু হয় তার। শুরুতে মাছের ও সবজি খেতের পরিচর্যা। সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হন। বিকালে এসে আবার তদারকি করেন।

কাজী মো. আনোয়ারুল হকের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বাসার সামনে একচালা একটি শেড রয়েছে। সেখানে পলিথিন ও ফয়েল পেপার দিয়ে একটি হাউজ করা হয়েছে। হাউজে ৬ হাজার লিটার পানি ধরে। সেখানে তিনি এর আগে কৈ মাছের চাষ করেছেন। ৪ মাস ১০ দিন চাষের পর মাছ তোলা শুরু করেন।

নিজে খাওয়া ও স্বজনদের দেওয়ার পর ১৮০ টাকা করে কেজি কৈ মাছ বিক্রি করেছেন। ক্রয় করার সময় কেজিতে ১৭৫টা মাছ পেয়েছেন। বিক্রির সময় ১৫ টায় এক কেজি হয়েছে। এখন তিনি হাউজে ১০ হাজার টেংরা মাছের পোনা ছেড়েছেন। পানিতে মোটরের সাহায্যে অক্সিজেন উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি নিয়মিত মাছের খাবার সরবরাহ ও হাউজের ময়লা পরিষ্কার করছেন।

কাজী মো. আনোয়ারুল হক জানান, ইউটিউবে দেখে তিনি এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেছেন। এটাকে বায়োফক্স পদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতির সুবিধা হচ্ছে, খাবারে অপচয় হয় না। মাছ হয় সুস্বাদু। এছাড়া তিনি আধা শতকের কম জমিতে ২০ শতক পুকুরের মাছ চাষ করছেন। রোগও কম হয়। সারা মাসে ৩০০ টাকার বিদ্যুৎ লাগে। মাছ ধরায় জেলে বা জনবলের প্রয়োজন নেই।

তিনি বুড়িচং উপজেলায় শেড করে আরও তিনটি হাউজ নির্মাণ করছেন। সেখানে প্রতিটিতে ৫০ হাজার লিটার পানি থাকবে। আরও বড় পরিসরে মাছ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তার। তিনি বলেন, অবসর আমার ভালো লাগে না। কাজের মধ্যে থাকলে শরীর ও মন দুই-ই ভালো থাকে। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে গাছ লাগানো, সবজি চাষ ও মাছ চাষে সময় কাটাই।

দাউদকান্দি হিমালয় মৎস্য চাষ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী আহমেদ মিয়াজী বলেন, পুকুর, দিঘি ও প্লাবনভূমির সঙ্গে বায়োফক্সসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করে মৎস্য সম্পদকে এগিয়ে নিতে হবে। এতে আমাদের নিজেদের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে আরও বেশি পরিমাণে মাছ রপ্তানি করা যাবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুরাদ হোসেন বলেন, বায়োফক্স পদ্ধতিতে মাছ চাষে সময় দিতে হবে। তাহলে ভালো ফল আসে। প্রথমে তেলাপিয়া মাছ দিয়ে শুরু করলে লোকসানের আশঙ্কা কম থাকে। এসব বিষয়ে আমরা নিয়মিত মৎস্য চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।