বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়ায় নতুন সুযোগ, আছে যে ১০ শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণের জন্য বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক মানদণ্ড প্রকাশ করেছে। এই পদক্ষেপকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য একটি যুগান্তকারী ‘সম-সুযোগ’ সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ আগে এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের এজেন্সিগুলো বেশি সুবিধা পেত।

আজ বুধবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারি তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকাতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও একই সুযোগ দিতে রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণ করে অবহিত করবে। সেই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতেই গতকাল তাদের কাছ থেকে ‘রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ সংক্রান্ত পত্র পাওয়া গেছে।

এখন থেকে এই অভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের রিক্রুটিং এজেন্ট ঠিক করা হবে। অর্থাৎ, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশের সাথে সামঞ্জস্য ও সমতা লাভ করল। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এই সমতার বিষয়টি উত্থাপন করার ফলেই এই নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য নির্ধারিত ১০ শর্ত

মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে সক্ষম এজেন্সির জন্য মোট ১০টি সুনির্দিষ্ট শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলো পূরণে সক্ষম এজেন্সিগুলোকে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন দাখিল করতে হবে।

শর্তগুলো হলো:

১. লাইসেন্স পাওয়ার পর অন্তত ৫ বছর সন্তোষজনকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

২. গত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর প্রমাণ থাকতে হবে।

৩. অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন ও নিয়োগ সংক্রান্ত বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে।

৫. সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সদাচরণের সনদ থাকতে হবে।

৬. জোরপূর্বক শ্রম, মানবপাচার, অর্থপাচার বা অন্য কোনো অপরাধে জড়িত থাকার কোনো রেকর্ড থাকা যাবে না।

৭. আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা মডিউলসহ নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে।

৮. অন্তত ৫ জন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে ইতিবাচক প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।

৯. কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে, যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।

১০. পূর্বে মালয়েশিয়া বা অন্য গন্তব্য দেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আইনসম্মত প্রক্রিয়া অনুসরণের প্রমাণ থাকতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এখন এসব মানদণ্ড পূরণকারী বৈধ লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্টদের তালিকাভুক্ত করতে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানাবে। এই পদক্ষেপ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মসংস্থানের পথ আরও প্রশস্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন