আর মাত্র চার দিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। বরাবরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তবে এবারের ঈদযাত্রা তুলনামূলকভাবে স্বস্তিদায়ক বলে মনে হচ্ছে। সড়ক ও রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়লেও, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই কোলাহলমুক্ত। কিছু কিছু লঞ্চে অল্পসংখ্যক যাত্রী দেখা গেলেও, পূর্বের মতো উপচেপড়া ভিড় বা তাড়াহুড়োর চিত্র চোখে পড়েনি। এমনকি কুলি-মজুরদের দর-কষাকষিও তেমন চোখে পড়েনি। লঞ্চের স্টাফরা হাঁকডাক দিলেও ঘাটে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
নৌপথে এবার বিশেষ লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়নি এবং আগাম টিকিট বিক্রিতেও তেমন সাড়া মেলেনি। অনেক কেবিনের টিকিট এখনও অবিক্রীত রয়েছে। লঞ্চ মালিকরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে যাত্রীদের নিয়মিত যাতায়াত তুলনামূলক বাড়লেও, উপচেপড়া ভিড় এখনও সদরঘাটে শুরু হয়নি। তাদের মতে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈরী আবহাওয়াকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। লঞ্চ মালিকরা জানান, ৩০ শতাংশ কেবিনের টিকিটও বিক্রি হয়নি, যা আগে এই সময়ে পাওয়া দুষ্কর ছিল। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে আজ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে, যা ১০ জুন পর্যন্ত চলবে। তবে যাত্রী সেভাবে না থাকায় সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন।
অন্যদিকে, কমলাপুর রেলস্টেশন ছিল যাত্রীদের পদচারণায় মুখর। ট্রেনের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়নি এবং সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট ছিলেন। টিকিটবিহীন যাত্রীদের প্রবেশ ঠেকাতে স্টেশনে কয়েক দফা চেকিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা যাত্রীদের জন্য উপকারী হয়েছে। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম জানান, বিনা টিকিটের যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ ঠেকাতে ব্যাপক চেকিং চলছে। হকার এবং ভবঘুরেদেরও স্টেশন এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদযাত্রায় যাত্রীরা যাতে কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য স্টেশনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও চেকিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতেও যাত্রীদের চাপ কম ছিল। সাধারণত ঈদের সময়ে বাস টার্মিনালগুলোতে দীর্ঘ সারি দেখা গেলেও, এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীদের কেউ অতিরিক্ত ভাড়া বা ভোগান্তিতে পড়েননি। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন— ঈদের দু’দিন আগে যাত্রী চাপ কিছুটা বাড়তে পারে, তবে এখন পর্যন্ত যাত্রীরা স্বস্তিতে রয়েছেন।
