মে ২২, ২০২৫

বৃহস্পতিবার ২২ মে, ২০২৫

স্ত্রীর অলঙ্কার বন্ধক রেখে নামেন সাগরে, এক টানে মিলল ৫৪ লাখ টাকার ইলিশ

Pledged his wife's jewelry and went into the sea, got 54 lakh hilsa in one pull
স্ত্রীর অলঙ্কার বন্ধক রেখে নামেন সাগরে, এক টানে মিলল ৫৪ লাখ টাকার ইলিশ। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা–সংলগ্ন রামগতি এলাকার জেলে আবুল খায়ের সাগরে ইলিশ ধরতে যাওয়ার জন্য হাতে কোনো টাকা ছিল না। পরে স্থানীয় মহাজনের কাছে স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে আট লাখ টাকা ধার নেন। সেই টাকা নিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ সাগরে ট্রলার ভাসান। জাল ফেলার পর প্রথম টানেই ভাগ্য ঘুরে গেছে তাঁর। এক টানে ইলিশ পেয়েছেন ১৭০ মণ, যা বিক্রি করে পেয়েছেন ৫৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা।

শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে আবুল খায়ের ইলিশগুলো উপজেলার অন্যতম বড় মাছের মোকাম মহিপুর মৎস্য বন্দরের আড়ত “মিঠুন ফিশ”-এর কাছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, এ উপকূলে এযাবৎকালের মধ্যে কোনো জেলের জালে ধরা পড়া এটা হলো সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মাছ।

আবুল খায়েরের ট্রলারটির নাম ‘এফবি রিভারমেট’। এই ট্রলারটিতে ছিলেন স্থানীয় ইউনুস মাঝি। তিনি জানান, ইলিশ ধরার জন্য ২০ আগস্ট রামগতি থেকে সাগরে ট্রলার ভাসান তাঁরা। ২৩ আগস্ট সকালে জাল ফেলেন। এদিন বিকেলে জাল তোলেন, এ সময় প্রচুর ইলিশ মাছ পান। এরপর তাঁরা মহিপুর মৎস্য বন্দরের উদ্দেশে রওনা করেন। গত শনিবার দুপুরে তাঁরা মহিপুরে পৌঁছান।

ট্রলারমালিক আবুল খায়েরের বলেন, তিনি মাছের ব্যবসা করতে গিয়ে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। এবার সাগরে নামার মতো কোনো অর্থ ছিল না তাঁর। যে কারণে স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে আট লাখ টাকা ধার নিয়ে জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় খাবার কিনে সাগরে নামেন। ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে ছিলেন দুশ্চিন্তার মধ্যে।

বিপুল পরিমাণ ইলিশ পেয়ে দারুণ খুশি আবুল খায়ের। তিনি বলেন, “মানুষ কত অসহায় হলে স্ত্রীর গহনা বন্ধক রাখে বলেন? আমি একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহ্‌ আমার দিকে মুখ ফিরে তাকিয়েছেন। এখন গিয়ে স্ত্রীর গহনা ছাড়িয়ে আনব। থাকার ঘর ভেঙে গেছে, সেটা ঠিক করব। বাকি টাকাগুলো কাজে লাগাব।”

আবুল খায়েরের সব কটি ইলিশই কিনেছেন মহিপুর মৎস্য বন্দরের মিঠুন ফিশের মালিক মিঠুন দাস।

মিঠুন দাস বলেন, জেলে আবুল খায়েরের জালে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। এর মধ্য ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ রয়েছে ৫৭ মণ। ৪২ হাজার টাকা দরে এর দাম হয়েছে ২৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৮ মণ। ৩৩ হাজার টাকা দরে দাম হয়েছে ২২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। তিনটিতে এক কেজি হয়, এমন আকারের ইলিশ ধরা পড়েছে ৯ মণ। ২৭ হাজার টাকা দরে এই ৯ মণের দাম হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ১ কেজি থেকে ১ হাজার ২০০ গ্রামের মধ্যে ইলিশ ধরা পড়েছে ১ মণ। এর দাম হয়েছে ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। ধরা পড়া ইলিশগুলো ট্রলারে সঠিকভাবে সুরক্ষা করতে না পারায় ৫০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের পাম (পচা) ইলিশ হয়েছে ৩৫ মণ। ১৫ হাজার টাকা দরে এর দাম হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন