জুলাই ১, ২০২৫

মঙ্গলবার ১ জুলাই, ২০২৫

ধান চাষ না করেও ১০০ মণ ধান পেলেন কৃষক, আরো হচ্ছে ফসল

The farmer got 100 maunds of paddy without cultivating paddy, and the crop is growing
ধান চাষ না করেও ১০০ মণ ধান পেলেন কৃষক, আরো হচ্ছে ফসল

খুলনার রুপসা উপজেলায় কৃষক সুলতানুর রহমান নামের এক কৃষক জমিতে ধান চাষাবাদ বা রোপণ প্রক্রিয়া ছাড়াই গত বছর ১০ একর জমি থেকে ১০০ মণ ধান পেয়েছেন তিনি।

উপজেলার জাবুসা গ্রামের সুলতানুর রহমান ১০ একর জমিতে বোরো মৌসুমে উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করেন। পাকা ধান কাটার কয়েকদিন পর ঝরে পড়া ধান থেকে চারা গজায় জমিতে। একসময় ওই চারা থেকেও ধান ফলে। কোনো প্রকার চাষাবাদ বা জমির পরিচর্যা ছাড়াই সে বছর ৯০ মণ ধান পান সুলতানুর রহমান। আশায় বুক বাঁধেন তিনি। এ বছরও তার ওই ১০ একর জমিতে ঝরে পড়া ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষক সুলতান আশা করছেন ঝরে পড়া ধানে জন্মানো গাছের কোনো পরিচর্যা ছাড়া এবার তিনি আরো বেশি ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তিনি আশা করছেন এ বছর কমপক্ষে সাড়ে তিনশো মণ ধান পাবে। যার বাজার দর সাড়ে তিন লাখ টাকা। এছাড়া আরও প্রায় এক লাখ টাকার খড়-কুটো বিক্রি করতে পারেন।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিমাদ্রী বিশ্বাস বলেন, গত মৌসুমে ঝরে পড়া ধান থেকে চারা গজানোর খবর পেয়ে আমরা জমিতে এসে দেখি এতে ফসল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন আমরা পরবর্তী বছর ঝরা ধান থেকে আরও ভালো ফলন কীভাবে আনা যায় সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করি। তারই আলোকে এ বছর কৃষককে ঝরে পড়া ধানের সঙ্গে আরও কিছু বীজ ধান ও সার ছোনানোসহ আগাছা পরিষ্কার করার পরামর্শ দিই। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে যে ধান হয়েছে তা বোরো মৌসুমের চেয়ে কম না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, কোনো প্রকার চাষাবাদ বা বাড়তি খরচ ছাড়া সহজ পদ্ধতিতে চাষি সুলতানুর রহমানের জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে। তার জমিতে চাষ করা উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৯৯ জাতটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা দুই বছর আগে আবিস্কার করেন। এই জাতটি লবণাক্ততা সহিষ্ণু এবং উঁচু বা নিচু যেকোনো জমিতে চাষাবাদ করা সম্ভব। হাইব্রিডের মতো অধিক ফলনও হয়।

তিনি বলেন, সুলতানুর রহমানের ঝরা ধান চাষের এই খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকার কৃষক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিচ্ছেন। তবে সুলতানুর রহমানের এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে আউশ মৌসুমে একদিকে অল্প খরচে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হবেন অন্যদিকে দেশের খাদ্য চাহিদা মিটবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনুর জাহান বলেন, কৃষিখাতের উন্নয়নে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রকল্প ও সংস্থার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। সে আলোকে রূপসা উপজেলায় কৃষিখাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সুলতানুর রহমান ঝরে পড়া ধান থেকে যে ফসল উৎপাদন করেছেন তাতে কৃষি উন্নয়নে নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। অন্যান্য কৃষকরা জমি ফেলে না রেখে এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি চাষিরা লাভবান হবেন।

আরও পড়ুন