
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা প্রশাসন ডাকাতিয়া নদীর নাব্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। শুক্রবার দিনব্যাপী উপজেলা প্রশাসন নদীটির তলদেশ থেকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করেছে।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে লাকসাম পৌরসভা, বাকই দক্ষিণ, মুদ্যফরগঞ্জ দক্ষিণ এবং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের উত্তর অংশে নদীর তলদেশ পরিষ্কার করা হয়।
নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সময় সৃষ্ট বাঁধ এবং বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত বাঁশের বেড়া ও ভেসাল জালের কারণে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছিল। এর ফলে দেশীয় মাছের প্রজাতি এবং কৃষিকাজ হুমকির মুখে পড়েছিল।
এই উদ্যোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ বলেন, ‘ডাকাতিয়া নদী বর্তমানে খাল, ডোবা, নালায় পরিণত হয়েছে। নদীটিকে একটি আকর্ষণীয় নদীতে রূপান্তরিত করার কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে কচুরিপানা, ভেসাল জালসহ পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। এতে করে বর্তমানে পানি প্রবাহ বেড়েছে। এই কাজ একদিনে শেষ করা যাবে না। ডাকাতিয়া নদীর নাব্যতা ফেরাতে সকল ধরনের কাজ চলমান থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাকাতিয়া নদীর ঐতিহ্য এখনো আছে। এক সময়ে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই নদী। বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার ও পাল তোলা নৌকা চলাচল করত। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা ডাকাতিয়া নদীটি উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে চাঁদপুরের মেঘনা মোহনায় মিশেছে। ঐতিহ্যের এই নদীকে কোনোভাবেই বিলীন হতে দেওয়া যাবে না। পর্যায়ক্রমে নদীর দুইপাশ দখলমুক্ত করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে।’
এই অপসারণ কার্যক্রমে লাকসাম সিটি রানার গ্রুপ, মানবতার তরে মানবপ্রেমী, জামায়াতে ইসলামীর মানবিক টিম এবং স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশগ্রহণ করে। ইউএনও কাউছার হামিদ তাদের ধন্যবাদ জানান।