ডিসেম্বর ১১, ২০২৪

বুধবার ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

কুমিল্লায় বন্যা আর নদী ভাঙনে ১১০০ কিমি পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত

RisingCumilla.Com - floods in Cumilla
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর স্মরণ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে কুমিল্লা। বন্যা আর নদী ভাঙনে ১৭টি উপজেলার ১৪টিই আক্রান্ত হয়েছে। বন্যায় আক্রান্তের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। এতে প্রায় এক হাজার ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে এলজিইডি ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে।

কোনো কোনো সড়ক হাঁটু থেকে বুক সমান পানিতে তলিয়ে ছিল। টানা ১০ দিনের বন্যার পর অনেক জায়গাতেই সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। ভেসে উঠেছে বন্যার ক্ষত।

তীব্র স্রোতের তোড়ে অনেক জায়গায় সড়ক এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, সেখানে রাস্তার অস্তিত্বই প্রায় বিলীন হয়ে গেছে।

বন্যায় জেলায় এলজিইডির সড়কগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬টি ব্রিজ-কালভার্ট। কয়েকটি ব্রিজ একেবারে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতি তো হয়েছেই।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, ভয়াবহ এই বন্যায় কয়েকশ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো শেষ করতে পারিনি। দু-এক দিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে বলা যাবে।

এদিকে, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এবন্যায় কুমিল্লা জেলায় ৩ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে বুড়িচং ও নাঙ্গলকোট উপজেলা।

সূত্র মতে, কুমিল্লা জেলায় ৮ হাজার ৬৭৪টি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের পরিমাণ ৭৪ হাজার ৮১টি। এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলাতেই সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৪৩টি ঘর। সব মিলিয়ে কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির পরিমাণ ৮২ হাজার ৭৫৫টি।

জানা গেছে, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরের বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার উপজেলা এবং দক্ষিণের নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। শুধু কুমিল্লা অঞ্চলের ভারতীয় ঢল এবং নদীর বানের পানি যে কুমিল্লায় প্রভাব ফেলেছে এমন নয় বরং নোয়াখালী-ফেনীর বন্যার পানির প্রভাবে দীর্ঘদিন তলিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চল। বন্যার সময় যত দীর্ঘ হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ছে। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষত।

উল্লেখ্য, এবারের বন্যায় প্লাবিত কৃষিখাত, মাছের ঘের, প্রাণিসম্পদ, রাস্তাঘাট ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মিলিয়ে কুমিল্লাজুড়ে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য মতে, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।