নভেম্বর ৬, ২০২৪

বুধবার ৬ নভেম্বর, ২০২৪

এইচএসসির ফল দেখে যেতে পারলেন ছাত্র আন্দোলনের রায়হান, কাঁদছে বাবা-মা

Rising Cumilla - Raihan of the student movement was able to see the results of the HSC, the parents are crying
ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার এক গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতনেও তাঁর অবদান ছিলো। জীবন উৎসর্গ করার মতো সর্বোচ্চ অবদান।

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) তারিখেও তাঁর নিজস্ব একটা বিজয় হয়েছে, চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নোয়াখালীর কৃতি সন্তান শহীদ মো. রায়হান।

৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মো. রায়হান। আজ তাঁর পরীক্ষার ফলাফল দুনিয়ার সব জানলেও নিজ চোখে দেখে যেতে পারলেন না নিজের পরীক্ষার ফলাফল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোদ্ধা রায়হান।

মো. রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। সে রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ফল জানতে পারে তার পরিবার। ওই ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানায়, গত ৫ আগস্ট (সোমবার) রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায় বিজয় মিছিলে যোগদান করলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন।

রায়হানের বোন উর্মি আক্তার বলেন, আমার ভাই মেধাবী ছাত্র ছিল। তার আচার-আচরণও ভালো ছিলো। তার জন্য আমার বাবা-মা সব সময় কান্না করেন। আজ পরীক্ষার ফলাফলের খবর শুনে বাবা-মা আরো বেশি কান্না করছেন। আমার ভাই বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।

রায়হানের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফল দিয়ে কী হবে? সে পাশ করসে তা দিয়ে এখন কি করবো। তার আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা। সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা এখনোও কান্না করছেন। নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি৷ তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করাইসি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।

গুলশান কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কালাম বলেন, আমাদের কলেজ থেকে এ বছর শহীদ রায়হান সহ ৩৯৪ জন বানিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারমধ্যে ৩৮১ জন পাশ করেছে। রায়হান জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার ফলাফল আরও ভালো হওয়ার কথা। কিভাবে এত খারাপ হলো তা আমাদের জানা নাই। তবে তার মৃত্যু আমাদের এখনও কাঁদায়। সরকার যেনো তার পরিবারের সাথে থাকে সে আশা করছি।