
বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী প্রযুক্তি-ভিত্তিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্যারি’-এর সাথে একীভূত হয়ে একটি নতুন কোম্পানি গঠন করেছে। এই নতুন কোম্পানির নামকরণ করা হয়েছে ‘সিল্ক’ গ্রুপ। চমকপ্রদ খবর হলো, এই নতুন জোট গঠনের পরপরই প্রতিষ্ঠানটি ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল বিনিয়োগ লাভ করেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ আজ বুধবার এক বিশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল শাখা সানাবিল ইনভেস্টমেন্টস এবং প্রখ্যাত বিনিয়োগকারী পিটার থিয়েলের ভ্যালার ভেঞ্চারস যৌথভাবে এই নবগঠিত বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম সিল্ক গ্রুপে বিশাল অঙ্কের তহবিল সরবরাহের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৯২৫ বিলিয়ন ডলারের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক সংস্থা সানাবিল ইনভেস্টমেন্টস এবং ভ্যালার ছাড়াও কাতার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ একদল বিনিয়োগকারী এই উদ্যোগে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশের বৃহত্তম বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বাণিজ্য প্ল্যাটফর্ম শপআপ এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাজার স্যারি একত্রিত হয়ে ‘সিল্ক’ গ্রুপ তৈরি করেছে। এই সম্মিলিত উদ্যোগ উপসাগরীয় অঞ্চল এবং এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর বাজারকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করে তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।
প্রাথমিকভাবে, বাংলাদেশের শপআপ এবং সৌদি আরবের স্যারি স্বতন্ত্রভাবে তাদের নিজ নিজ ব্যবসার ক্ষেত্রে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে এই দুটি কোম্পানির মালিকানা এখন থেকে ন্যস্ত হবে নতুন কোম্পানি ‘সিল্ক’ গ্রুপের হাতে।
কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে প্রাথমিকভাবে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তাদের। সিল্ক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফ জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা মনে করি আইপিও-এর জন্য উপসাগরীয় অঞ্চলের বাজার, বিশেষ করে সৌদি বাজার খুবই সম্ভাবনাময়।”
এছাড়াও, স্যারি ও শপআপের এই একীভূতকরণের মাধ্যমে গঠিত সিল্ক কোম্পানি সৌদি আরব ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে বলে জানান আফিফ জামান।
অন্যদিকে, আগামী ছয় মাস ধরে কোম্পানিটি গোষ্ঠীগত পর্যায়ে তাদের লক্ষ্য অর্জনের দিকে মনোযোগ দেবে বলে জানিয়েছেন সিল্ক ফাইন্যান্সিয়ালের অর্থায়ন শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলদোসারী।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক আরোপিত ব্যাপক শুল্ক সিল্কের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে, কারণ রপ্তানিকারকরা এখন নতুন বাজারের সন্ধান করছেন।
এই বিশাল বিনিয়োগ এবং দুই উদীয়মান কোম্পানির একীভূতকরণ বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের প্রযুক্তি সক্ষমতা ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে তুলে ধরছে।