কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ৯৮ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও বিকাল ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেন।
বুধবার ( ১৭ জুলাই) প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে এ আল্টিমেটাম দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে। এর আগে মিছিলটি বঙ্গবন্ধু হল থেকে শুরু করে নজরুল হল, দত্ত হল, শেখ হাসিনা হল এবং ফয়জুন্নেছা হলের সামনে দিয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসির বংলোতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘ হল কারো বাপের না, হল আমরা ছাড়ছি না,‘ ধিক্কার ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার’, ‘ প্রশাসনে দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ’প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ‘ দিয়েছিত রক্ত আর দিব রক্ত’, স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী অফিসের দিকে তেড়ে গেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে দাবিগুলো কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেন। এসময় প্রক্টরের সামনে পুলিশের হামলা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলে পদত্যাগের দাবি জানায় তারা।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো, হল বন্ধের ঘোষণা ১ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে, হলের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা ( পানি, বিদুৎ, গ্যাস ও ওয়াই-ফাই) বহাল রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ সেবা চালু রাখতে হবে এবং ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস ও ছাত্রদেরকে যারা হুমকি ধমকি দিয়েছে তাদের আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাকি তিন দফা দাবি ৬ টার মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য আল্টিমেটাম দেন প্রশাসনকে।
কোটা আন্দোলনের সমন্ধয়ক এমরান হোসেন বলেন, গত বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার বিচার আমরা পাইনি। বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় আজ রক্তাক্ত, শিক্ষার্থীদের মারার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ছাত্রলীগকে উষ্কে দিয়েছে। তিনি আর ও বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস সন্ত্রাস মুক্ত, দালাল মুক্ত এবং ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমাদের বাকি দাবিগুলো সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে লিখিত নোটিশের মাধ্যমে জানাতে হবে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠিন হুশিয়ারি দেন প্রশাসনকে।
ফয়জুন্নেছা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তানজিনা বলেন, আমাদের হল ছাত্রলীগের আওতা মুক্ত। আমরা দেখেছি ১৯৫২ সালে রফিক, বরকত শহীদ হওয়ার পর সরকার পরের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। আমরা কোন রাষ্ট্রে বসবাস করতেছি যেখানে কোন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে নাই।আমরা আমাদের আবাসিক হল ছাড়ছি না। ছাড়তে হলে প্রক্টর কে তাদের কোয়ার্টার ছাড়তে হবে।
শিক্ষার্থীরা হলে থাকার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান মিলকি বলেন, হল ছাড়া কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যারা হলে থাকতে চায় থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীরা এখানে নিরাপদ রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দীকি বলেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে পারবে। এক্ষেত্রে হল প্রশাসন কোন শক্তি প্রয়োগ করবে না। পূর্বের মতো প্রক্টরিয়াল বডি এবং হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিবেন।