
বর্তমানে তরুণ ও কম বয়সীদের মধ্যেও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে, যা বিশেষজ্ঞদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, কিছু শারীরিক রোগ, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং বংশগত নানা সমস্যার ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলেই অল্প বয়সেই স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
চলুন জেনে নিই কমবয়সীদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকের প্রধান কারণগুলো—
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অতিরিক্ত জাংক ফুড গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়। বর্তমান সময়ে কম বয়সীদের মধ্যে স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকিকে আরও বেশি বাড়িয়ে তুলছে।
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ কোলেস্টেরল
আগে যেসব রোগ মূলত মধ্যবয়স বা বার্ধক্যে বেশি দেখা যেত, সেগুলো এখন তরুণদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ মস্তিষ্কের রক্তনালিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যায়।
হৃদরোগজনিত সমস্যা
জন্মগত হৃদরোগ, হার্টের ভালভ সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন থাকলে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি থাকে। এই জমাট রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছালে হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে।
মানসিক চাপের প্রভাব
দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। এসব কারণ একসঙ্গে কাজ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যা অনেক সময় তরুণদের ক্ষেত্রেও মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
অতিরিক্ত মিষ্টিজাত খাবার, ফাস্টফুড ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাব স্থূলতার অন্যতম কারণ। স্থূলতা থেকেই ধীরে ধীরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো রোগ জন্ম নেয়, যা স্ট্রোকের বড় ঝুঁকি হিসেবে কাজ করে।
অতিরিক্ত মদ্যপানের ঝুঁকি
নিয়মিত ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে শুধু ফ্যাটি লিভারের সমস্যাই নয়, মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। ফলে ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বহু গুণে বেড়ে যায়।
রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা (ব্লাড ক্লটিং ডিজঅর্ডার)
থ্রম্বোফিলিয়া কিংবা সিকল সেল অ্যানিমিয়ার মতো রোগে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা তুলনামূলক বেশি থাকে। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
অন্যান্য কারণ
কম বয়সীদের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
১. দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ
২. অপর্যাপ্ত ঘুম ও অনিয়মিত জীবনযাপন
৩. ক্যারোটিড ধমনী ব্লক হয়ে যাওয়া, যার ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হয়।
সূত্র: এশিয়া নেট









