
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাল্কহেড নৌ-পরিবহন মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নবগঠিত কমিটি’র আত্মপ্রকাশ ও পরিচিতি সভা পন্ড করতে সভার প্যান্ডেল ভাংচুর ও খাবারের জন্যে আয়োজন করা গরুর মাংস লুট করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সরাইল উপজেলা’র অরুয়াইল ইউনিয়নের বিআরডিসি মাঠে নবগঠিত এ কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে গতকাল রাতেই প্যান্ডেলের কাজ সমাপ্ত করা হয়। পরবর্তীতে মধ্যরাতে প্যান্ডেল ভাংচুরের এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, পাকশিমুল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সায়েম আওয়ালে’র নেতৃত্বে এ হামলা সংঘটিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের নৌ-পরিবহন মালিক সমিতি দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় এলাকাজুড়ে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। গত (২৭ আগস্ট) গাজী মোঃ নোয়াব মিয়া’কে সভাপতি ও মোঃ হুমায়ুন কবির’কে সাধারণ সম্পাদক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাল্কহেড নৌপরিবহন মালিক সমিতির আংশিক কমিটি গঠন করে এক পক্ষ।এদিকে অপর পক্ষ সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাল্কহেড নৌ-পরিবহন মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের কমিটি’র আত্মপ্রকাশ ও পরিচিতি সভা করার আয়োজন করলে প্রতিপক্ষের লোকজন এটি পন্ড করার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
তবে হামলায় প্যান্ডেল লণ্ডভণ্ড হলেও উন্মুক্ত পরিবেশেই মোঃ আব্দুল খালেক’কে সভাপতি ও অরুয়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এনাম’কে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে।
হামলা’র ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাল্কহেড নৌ-পরিবহন মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, আমাদের এই সংগঠন সরকারিভাবে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত ও নৌ-পরিবহন মালিক সমিতি’র সমর্থন আমাদের পক্ষে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের সভার আয়োজন করেছিলাম, এখানে নৌ-পুলিশের এসপি মহোদয় ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। কিন্তু গতকাল রাতে আচমকা পাকশিমুল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সায়েম আওয়াল, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রউফ, গোলাম নবী, তরুণ দলের নেতা ফারুক মিয়া, অরুয়াইল ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ তাদের দলবল নিয়ে আমাদের প্যান্ডেল ভাংচুর করেছে ও মাংস লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও বাজারে ওপেন মিছিল করে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে এবং যুবদল নেতা আজিজ বলেছে এখানে আমি ব্যবসা করতে হলে তাদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন থাকার পরেও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্যান্ডেল ভাংচুর করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পায়নি। আমি এটার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবির পাশাপাশি আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্যান্ডেল ভাংচুরের ফলে উন্মুক্ত পরিবেশেই কমিটি ঘোষণা শেষে অরুয়াইল ইউনিয়ন বিএনপি ও নবগঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাল্কহেড নৌ-পরিবহন মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এনাম বলেন, হামলা ও হুমকি উপেক্ষা করে আজকের এই কমিটির পরিচিতি সভায় সকলের উপস্থিতি প্রমাণ করে নৌ-মালিকদের সমর্থন আমাদের পক্ষে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেও আজ তাদের কারণে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সভা করতে পারিনি। তাদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে বিএনপির বহিষ্কৃত ও কতিপয় কিছু নেতা। এসকল বিষয়ে সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও আমাদের সিনিয়র নেতাদের অবগত করেছি, পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি আরও বলেন, অরুয়াইল পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত এস আই রফিক’কে হামলার বিষয়টি আন্দাজ করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালেও তিনি আমাকে নৌ-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এস আই রফিকের ছত্রছায়ায় আওয়ামী দোসররা এ কাজ ঘটানোর সাহস পেয়েছে। আমি এস আই রফিকের প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।