
ওসমান গনি, চান্দিনা প্রতিনিধি:
মানুষের ও সমাজের কল্যাণে কাজ করা এক বিরল গুণের অধিকারী মানুষ হলেন, জিয়াউর রহমান। যিনি তার নিজের লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছেন মানুষের জন্য। এ গুণ যার মধ্যে থাকে, তিনি নিজেকে ভুলে সমাজের জন্য বাঁচেন। ঠিক তেমনি একজন সমাজসেবক ও মানবিক মানুষ হলেন চান্দিনার ফাঐ গ্রামের জিয়াউর রহমান। তিনি নিজের জীবনকে সমাজ ও মানুষের সেবায় উৎসর্গ করেছেন। নিঃস্বার্থভাবে, বিনিময়ে কোনো কিছু প্রত্যাশা না করেই।
জিয়াউর রহমান চান্দিনা উপজেলার এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল মানুষের উপকার করা, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি বড় হয়েছেন এক কঠিন বাস্তবতা পেরিয়ে। শিক্ষাজীবন শেষ করেই তিনি যুক্ত হন সমাজসেবামূলক কাজে। যারা চিন্তা করেন মানুষের উন্নয়নের জন্য এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে গেলে অর্থ ও মন মানসিকতার প্রয়োজন হয়। আর সেই জন্য ই তিনি শিক্ষাজীবন শেষ করে সৌদি আরব চলে যান। সেখান থেকে শুরু হয়, তার সমাজ পরিবর্তনের কাজ ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সংগ্রাম। এলাকার অসহায়, দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ছিল তার মূল লক্ষ্য। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা কিংবা দুস্থ শিক্ষার্থীদের সাহায্য সহযোগিতা করা, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটের সংস্থার কাজের জন্য তিনি তার অবস্থান থেকে যতটুকু পারেন সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। এসব কাজ তিনি করেছেন নীরবে, কোনো প্রচার ছাড়াই।
জিয়াউর রহমান বিশ্বাস করেন, সমাজ পরিবর্তনের মূল শক্তি হচ্ছে মানুষকে একত্র করা। তাই তিনি তার নিজের ভালোবাসা দিয়ে এলাকার সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে একত্র করে নিজেকে যুক্ত করেছেন মানবিক কার্যক্রমে। তিনি তার নিজের কার্যক্রমকে জনসম্মুখে প্রচার না করে, নিরবে নিভৃতে চালিয়ে যাচ্ছেন তার সেবামূলক কার্যক্রম। বিভিন্নভাবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে সেবা দিতে পারলেই তিনি নিজেকে ধন্য মনে করেন। শীতবস্ত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, মাদকবিরোধী প্রচার ও শিক্ষাবিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তার নেতৃত্বে তরুণ সমাজ এখন আরও সক্রিয়ভাবে সমাজের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
শুধু তাই নয়, গেল করোনা মহামারির সময় জিয়াউর রহমান, বিভিন্নভাবে তিনি সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। জিয়াউর রহমান সৌদি আরবে কর্মের সন্ধানে অবস্থান করলেও তিনি তার এলাকার লোকজনের মাধ্যমে, যখন চারদিকে আতঙ্ক আর ভয়, তখন তিনি অসহায় মানুষকে নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এখনও জিয়াউর রহমান বিদেশ থেকে তার এলাকার অসহায় মানুষের মাঝে সহযোগিতা করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করছেন। কারও ওষুধ ফুরিয়ে গেলে নিজে বাজার থেকে কিনে দিয়েছেন। সমাজের এই দুঃসময়ে তার নিঃস্বার্থ ত্যাগ অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে মানবিক হতে।
জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ড শুধু মানবিক নয়, পরিবেশবান্ধবও। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি পরিচ্ছন্ন ও সবুজ সমাজই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি। এজন্য তিনি নিজ উদ্যোগে স্কুল-কলেজে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছেন। তরুণদের তিনি শেখান, “একটি গাছ লাগানো মানে একটি প্রাণ বাঁচানো।”
তার এই নীরব বিপ্লব ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকায়। আজ চান্দিনার অনেক তরুণ তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমাজসেবায় নামছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরাও তার কাজের প্রশংসা করেছেন। কেউ বলেন, “জিয়াউর রহমান হচ্ছেন সেই মানুষ, যিনি নিজেকে সমাজের সঙ্গে একাত্ম করেছেন।”
অর্থ, পদমর্যাদা বা খ্যাতি তার জীবনের লক্ষ্য নয়। তিনি বলেন, “মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার প্রাপ্তি।” এই একবাক্যেই তার মানবিক দর্শনের সারমর্ম ফুটে ওঠে।
আজকের প্রতিযোগিতামূলক সমাজে, যেখানে অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে ব্যস্ত, সেখানে জিয়াউর রহমানের মতো নিবেদিত মানুষ সমাজের আলোকবর্তিকা। তিনি প্রমাণ করেছেন, একজন মানুষও চাইলে সমাজে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তার প্রতিটি উদ্যোগ এক একটি অনুপ্রেরণার গল্প, যা শেখায়, মানবতা কখনও হারায় না; বরং একজন নিবেদিত প্রাণ মানুষই তা জাগিয়ে রাখে যুগের পর যুগ।
জিয়াউর রহমান আজও প্রতিদিন সমাজ পরিবর্তনের জন্য নিয়মিত কাজ করে থাকেন, মানুষের পাশে। তিনি জানেন, সমাজ পরিবর্তন একদিনে আসে না, তবে শুরুটা যদি মানবতার আলোয় হয়, তাহলে পথ দীর্ঘ হলেও লক্ষ্য একদিন পূর্ণ হবেই। তার জীবন তাই এক মানবিক স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি, যেখানে অন্যের হাসিই নিজের সুখ।