
শুরু হচ্ছে ভাদ্র মাস। ঋতুবৈচিত্র্যে আসছে শরৎকাল। চারিদিকে রয়েছে পানিও। এ সময়ে একটু উঁচু স্থানে চাষ করতে পারেন লাউ। অনেকেই লাউকে শীতকালীন সবজি মনে করলেও, বর্তমানে উন্নত জাতের কল্যাণে সারা বছরই এর ফলন পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত বৃষ্টি বা জলীয় বাষ্পে ফলন কিছুটা কমে যেতে পারে, তাই সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদ করলে ভালো ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব।
এই সময়ে যারা লাউ চাষ করতে চান, তাদের জন্য কৃষি তথ্য সার্ভিসের দেওয়া কিছু পরামর্শ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
জেনে নিন ভাদ্র মাসে লাউ চাষের আধুনিক পদ্ধতি
মাদা বা গর্ত তৈরি
প্রথমে উঁচু ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস লাগে এমন জমি নির্বাচন করুন। এরপর, প্রতিটি মাদা বা গর্তকে ৪-৫ মিটার দূরত্বে তৈরি করতে হবে। প্রতিটি গর্তের মাপ হতে হবে ৭৫ সেন্টিমিটার চওড়া এবং ৬০ সেন্টিমিটার গভীর। এটি গাছের বৃদ্ধি এবং বায়ু চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সার প্রয়োগ
চাষাবাদের আগে প্রতিটি মাদায় নিম্নলিখিত সারগুলি সঠিকভাবে মেশাতে হবে:
- গোবর: ২০ কেজি
- টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট): ২০০ গ্রাম
- এমওপি (মিউরেট অব পটাশ): ৭৫ গ্রাম
এই মিশ্রণটি গাছের প্রাথমিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে।
বীজ বপন ও চারা পরিচর্যা
মাদা তৈরি হয়ে গেলে প্রতিটি গর্তে ৪-৫টি বীজ বুনে দিন। বীজ থেকে চারা গজানোর ২-৩ সপ্তাহ পর দুই থেকে তিন কিস্তিতে আরও সার দিতে হবে। এই সারগুলি হলো:
- ইউরিয়া: ২৫০ গ্রাম
- এমওপি: ৭৫ গ্রাম
এই সার প্রয়োগে গাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে।
চারা উৎপাদন ও বীজতলা তৈরি
যদি সরাসরি বীজ না বুনে চারা উৎপাদন করতে চান, তাহলে উঁচু এবং আলো-বাতাসপূর্ণ স্থানে ১ মিটার চওড়া বীজতলা তৈরি করুন। জমির দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে এর দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। বীজতলায় উন্নত জাতের বীজ বপন করলে সুস্থ সবল চারা তৈরি হবে।
পরিচর্যা ও পোকামাকড় দমন
গাছ বেড়ে ওঠার জন্য নিয়মিত পরিচর্যা অপরিহার্য। বীজ গজানোর পর সারির মাঝের মাটি আলগা করে দিতে হবে, যাতে গাছের শেকড় সহজে বাড়তে পারে। পাশাপাশি, পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে চারাগুলিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। নিয়মিত গাছগুলো পর্যবেক্ষণ করুন যেন কোনো রোগ বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না হয়।