জানুয়ারি ১২, ২০২৫

রবিবার ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

রমজানে স্কুল খোলা রাখার কারণ জানালেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়

School Students
ছবি: সংগৃহীত

রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে রীতিমতো তিন দিনের ‘নাটকীয়তা’ দেখেছে দেশবাসী। ক্ষণে ক্ষণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে তটস্থ হয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সিদ্ধান্তে অনড় থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেদের পক্ষেই আদালতের আদেশ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১ মার্চ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকছে। এ ছাড়া মাদ্রাসায় ২১ মার্চ এবং কলেজে ২৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে ক্লাশ। বছরের শুরুতে ঘোষিত ছুটির তালিকায় পুরো রমজানজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ছিল। ফলে শিক্ষক ও অভিভাবক স্কুল বন্ধ রাখার পক্ষে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে— শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেন রমজানে দুই সপ্তাহ স্কুল-কলেজ খোলা রাখতে এত মরিয়া?

অভিভাবক-শিক্ষকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যুক্তি তুলে ধরেছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মতামত জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীও।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন কারিকুলাম মুখস্থনির্ভর নয়, বরং হাতে-কলমে শেখা ও মূল্যায়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রতি বছর অন্তত ১৮৫ কর্মদিবস প্রয়োজন।

এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, “নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি অধ্যায় পড়বে, হাতে-কলমে শিখবে এবং তখনই মূল্যায়ন হবে।”

মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, “নতুন কারিকুলামে যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের শেখাতে বছরে অন্তত ১৮৫ কর্মদিবস প্রয়োজন। এ জন্য ছুটি বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী বছরে রমজানে ছুটি আরও কমানোও হতে পারে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, “দেখুন-উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগের কারণে ছুটি দিতে হয়। এতে সেখানে শিখনঘণ্টা কমে যায়। আবার কোনো কোনো এলাকায় বেশি শীত পড়লেও ছুটি দিতে হচ্ছে। এতেও শিখনঘণ্টা কমে যাচ্ছে। এসব কারণে শিখনঘণ্টা হিসাব করে ১৮৫ দিনের বেশি শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষাপঞ্জিকা করা উচিত হবে।”

যে কারণে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা জরুরি

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ানো হয়। প্রথম বছর পাইলটিং হিসেবে ধরা হয়। এবার প্রাথমিকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় এবং মাধ্যমিকের অষ্টম-নবমে এ শিক্ষাক্রম পড়ানো হবে। সব মিলিয়ে সাত শ্রেণিতে পূর্ণরূপে নতুন কারিকুলামে পাঠদান ও মূল্যায়ন হবে। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে তথ্য সংগ্রহসহ নানান কারণে আগের চেয়ে বেশি সময় প্রয়োজন।