
চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬) এর প্রথম প্রান্তিকে দেশের ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আগের মতোই নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর ফলে ১ জুলাই থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানিকৃত এসব পণ্য এই সুবিধার আওতায় আসবে।
সার্কুলারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) রপ্তানির জন্য যে ভর্তুকির হার ঘোষণা করা হয়েছিল, তা অপরিবর্তিত থাকছে। রপ্তানিকারকরা পূর্বের ন্যায় শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জন্য পূর্বের হারেই নগদ সহায়তা চালু রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত বছর সহায়তার হার কমানো হয়েছিল, এবং সেই সংশোধিত হারগুলোই এখন অপরিবর্তিতভাবে বহাল থাকছে।
কোন খাতে কত প্রণোদনা?
নগদ সহায়তার প্রধান সুবিধাভোগী হলো দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত। দেশি সুতা ব্যবহার করে উৎপাদিত তৈরি পোশাক নতুন বাজারে রপ্তানি করলে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রণোদনা মিলবে। উল্লেখ্য, গত বছরের জুনের আগে এই হার ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ এবং ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদারে ৬ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যে নগদ সহায়তা মিলবে ১০ শতাংশ।
গত কয়েক বছর ধরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কিছুটা কমলেও, বৈচিত্র্যময় পাটপণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা বহাল থাকবে। এছাড়া, সাধারণ পাটজাত পণ্যে ৫ শতাংশ এবং পাট সুতায় ৩ শতাংশ প্রণোদনা পাওয়া যাবে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের মধ্যে, হালকা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা, ওষুধের কাঁচামালে ৫ শতাংশ, বাইসাইকেল রপ্তানিতে ৩ শতাংশ এবং আসবাব পণ্য রপ্তানিতে ৮ শতাংশ নগদ সহায়তা থাকছে।
এছাড়াও, হিমায়িত চিংড়ি, মোটরসাইকেল, ইলেকট্রনিকস, পেট বোতল ফ্লেক্স, জাহাজ, প্লাস্টিক পণ্য, হাতে তৈরি পণ্য (যেমন হোগলা, খড়, আখ বা নারিকেলের ছোবড়া), তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট, গরু-মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ, কাঁকড়া, কুঁচে, আগর, আঁতর ইত্যাদি পণ্য রপ্তানিতেও নগদ সহায়তা আগের মতোই বহাল থাকবে।
নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক
তবে, এই ভর্তুকি পাওয়ার আগে রপ্তানিকারকদের অবশ্যই নিরীক্ষা (অডিট) সম্পন্ন করাতে হবে। এই নিরীক্ষা অনুমোদিত অডিট ফার্ম বা বহিঃনিরীক্ষকের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। এমনকি, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নিয়োজিত বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান দিয়েও এই নিরীক্ষা করানো যাবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।