মার্চ ১২, ২০২৫

বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

রঙিন ফুলকপি চাষে চমক, বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মাঠ থেকেই

Surprise of colorful cauliflower at Lalmonirhat, smile on farmer's face
ছবি: সংগৃহীত

দেশের উত্তরাঞ্চলের সবজি উৎপাদনের অন্যতম জেলা লালমনিরহাট। এখানকার সবজি দিয়ে জেলার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় দেশের অন্যান্য জেলায়। বিশেষ করে বেগুন, পটল, সিম, আলু, মুলা, লাউ, সিম, শসা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি বছরজুড়েই চাষ হয়ে থাকে এ জেলায়। এবার সেই উৎপাদিত সবজি তালিকায় যুক্ত হয়েছে রঙিন ফুলকপি। জেলায় বেশ কয়েকটি সবজির মাঠেই চাষ হচ্ছে বেগুনি এবং হলুদ রঙের ফুলকপি।

এর ধারাবাহিকতায় শখের বসে রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর এলাকার রাবেয়া বেগম। এখন তার মাঠজুড়ে সবুজ পাতার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে বাহারি রঙের ফুলকপি। কাছ থেকে ভিন্ন রঙে কপি গুলো মুগ্ধ করবে দর্শনার্থীদের।

এ অঞ্চলে সাদা রঙের ফুলকপি নিয়মিত চাষ হলেও এ বছর প্রথম রঙিন কপির চাষ হচ্ছে। এসব রঙিন ফুলকপির চাহিদা রয়েছে স্থানীয় বাজারে ব্যাপক পরিমাণে। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ছুটে আসছেন এসব ভিন্ন রঙের কপি দেখার জন্য।

রাবেয়া জানান, এসব রঙিন কপির সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে সার, সেচ ও কীটনাশক তুলনামূলক অনেক কম প্রয়োজন হয়। সাদা ফুলকপিতে যা অনেক বেশি প্রয়োজন হয়। কৃষক যদি এই রঙিন কপি চাষ করতে চায় তাহলে বড় অঙ্কে লাভবান হওয়া সম্ভব রয়েছে। এই মৌসুমে শুরুতে একেকটি রঙিন কপি বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা পর্যন্ত। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। যদিও খুচরা বাজারে এসব কপির দাম আরও বেশি।

জানা যায়, সাধারণ সাদা ফুলকপির তুলনায় রঙিন ফুলকপি চাষ খুব সহজ। চাষ পদ্ধতির তেমন একটি তফাত না থাকলেও খরচ লাগে কম। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এসব কপি। হলুদ ও বেগুনি রঙের এসব কপির তুলনামূলক চাহিদাও রয়েছে অনেক বেশি। নতুন বলে আগ্রহভরে কিনছেন আবার কেউ পুষ্টিগুণ বিবেচনায় কিনে খাচ্ছেন এসব ফুলকপি। তাই অনেক ক্ষেত্রে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মাঠ থেকেই।

কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকরা প্রচলিত সাদা জাতের দেশীয় ফুলকপি চাষ করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই এ অঞ্চলের কৃষক কৃষাণীরা এবার ঝুঁকেছেন রঙিন জাতের ফুলকপি চাষে। এ জাতীয় কপি চাষ করে অনেক উদ্যোক্তা সফল হয়েছে। অন্য কপির চেয়ে রঙিন ফুল কপির স্বাদ অনেক বেশি। আর স্বাদ হওয়ায় ভোক্তার কাছে চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আর তাই বাজারজাতের ঝামেলা কম। কেবল কালীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকজন এবার রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশা করেন তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি জানান, কালীগঞ্জের মাটি কৃষির জন্য উর্বর। এখানে সব ফসল চাষ করা সম্ভব। উচ্চমূল্যের ফসল চাষে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। রঙিন ফুলকপির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষকরা দাম ভাল পাচ্ছে। খরচ তুলনামূলক কম। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে রাবেয়াকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। উপজেলায় বড় পরিসরে এ রঙিন ফুলকপি চাষ করতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।

সূত্র: বাসস