
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চা ও মুক্ত চিন্তার প্রাঙ্গণ। স্কুল-কলেজের সীমাবদ্ধ পড়াশোনা ও পরীক্ষার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীরা অর্জন করে নানা রকম অভিজ্ঞতা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, অনুষ্ঠান, আনন্দ-ফুর্তি, স্মৃতি গড়া সবই এর অংশ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরাও এর ব্যতিক্রম নন। প্রায়ই দেখা যায়, বিভিন্ন উপলক্ষে বহিরঙ্গনে চড়ুইভাতি বা ক্ষুদ্র অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এসব আয়োজনে সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো যেন একটি ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’। কিন্তু সেই গান-বাজনাই এখন আনন্দের বদলে নিয়ে আসছে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে চলা এসব উচ্চস্বরে গান-বাজনা একাডেমিক কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। ক্লাস ও পরীক্ষার সময় একাডেমিক ভবনের সামনে উচ্চস্বরে সাউন্ড বাজায় অনেক সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করা হলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি।
বর্তমানে প্রক্টর অফিসের অনুমতি নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শেষে এসব অনুষ্ঠান করার নিয়ম চালু রয়েছে। তবে তাতেও ভোগান্তি কমেনি। সম্প্রতি ৯ নভেম্বর রসায়ন বিভাগের ল্যাব ফাইনাল চলাকালীন একাডেমিক ভবন–৪ এর সামনে পরিসংখ্যান বিভাগের আয়োজিত সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মারাত্মক অসুবিধায় পড়েন। এ ঘটনায় এক শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে।
শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, বাইরে এত জোরে গান বাজলে ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখা যায় না। শিক্ষক যা বুঝান, সব ঠিকমতো বোঝা যায় না।
আরেক শিক্ষার্থী বিন্তি হোসেন বলেন, পড়াশোনার পরিবেশটা শান্ত না থাকলে কষ্ট হয়। গান বাজানো খারাপ না, কিন্তু সময়-পরিস্থিতি বুঝে, অন্যের স্বাচ্ছন্দ্য ভেবে করলে সেটাই ভালো।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজল সরকার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম থাকবেই। তবে ক্যাম্পাস ছোট হওয়ায় নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ঠিক করে দিলে ভালো হয়। এতে একাডেমিক কার্যক্রমও ব্যাহত হবে না, আবার সাংস্কৃতিক চর্চাও চলবে।
এ বিষয়ে বহিরঙ্গন পরিচালক ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ক্লাস-পরীক্ষা চলা্র সময় কেউ কোন গান বাজনা বাজাতেই পারবে না, একদম বন্ধ। আর আগে তো আমরা ছাত্রদের কথা চিন্তা করে, যেহেতু আলাদা কোন জায়গা নাই এইজন্য একাডেমিক বিল্ডিং এর সামনে তারা একটু চুড়ইভাতি করতে পারতো, সেটাও বন্ধ করে দিছি। এখন স্বাধীনতা স্মারক মাঠ ছাড়া এদিকে কেউ কোন প্রোগ্রাম করতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, অনেকের রাতে কাজ থাকে, অনেকের ল্যাবে কাজ থাকে, অনেকে খাতা কাটেন শিক্ষকরা। এটাতো বিশ্ববিদ্যালয় পিকনিক করার জায়গা না।







