ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ্বে এই প্রথম মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন যৌনকর্মীরা, মেলবে পেনশনও!

RisingCumilla.Com - This is the first maternity leave in the world, sex workers will receive a pension!
ছবি: এপি

বিশ্বে এই প্রথম যৌনকর্মীরা পাবেন পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সামাজিক সুরক্ষার বেশ কিছু সুযোগ। তাঁদের দীর্ঘ দিনের দাবিকে স্বীকৃতি দিয়ে আইন আনল বেলজিয়াম। যা বিশ্বে প্রথম এবং ঐতিহাসিকও বটে। সর্বোপরি, এ কাজকে অন্য যেকোনও চাকরির মতো গণ্য করা হবে।

বেলজিয়াম সরকারের দাবি, তাদের এই পদক্ষেপের ফলে অন্যান্য পেশার মতো যৌনকর্মীরাও সামাজিকভাবে সুরক্ষিত থাকবেন। কর্মক্ষেত্রে তারা আর বঞ্চনার শিকার হবেন না।

বিশ্বের আদিমতম জীবিকা হলো দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন সময়ে ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছায় বহু নারী এই পেশায় এসেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কোনও কোনও সময়ে আবার ক্ষমতার আস্ফালনেই মেয়েদের বাধ্য করা হয়েছে এই পেশা বেছে নিতে। বেলজিয়ামে এই আইন অবশ্য একদিনে আসেনি। অতিমারি করোনার সময়ে রুজিরুটি নিয়ে সংশয়ের মধ্যে পড়েছিলেন যৌনকর্মীরা। ওই সময়ে আন্দোলনও হয়।

তবে এই আইন তৈরির আগে বিরোধিতাও ছিল। সমালোচকরা যুক্তি দেন, আইন এনে যৌনকর্মীদের সুরক্ষাপ্রদানের অর্থই হলো দেহ ব্যবসা এবং নারী পাচারের মতো সমস্যাগুলোকেও আইনি বৈধতা দেওয়া। কিন্তু এর বিপক্ষে প্রচুর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরব হয়।
তাদের দাবি, শ্রমের অধিকারের চেয়েও প্রচুর যৌনকর্মী চান এই পেশা থেকে মুক্তি। পাল্টা যুক্তিতে বলা হয়, যৌনকর্মীদের জন্য এই আইন আনলে এই পেশায় যারা ‘নিয়োগকর্তা’, তাদের জুলুম বন্ধ করা যাবে। কর্মীদের মর্যাদা বৃদ্ধি হবে। তাদের শ্রমের প্রতি সম্মান জানানো হবে।

এই আইনে কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনা দূর করতে যৌনকর্মীদের দেওয়া হবে কর্মসংস্থানের শংসাপত্র। সেটা দেখিয়ে তারা স্বাস্থ্যবীমা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং আইনি সুরক্ষা পাবেন। এখানেই শেষ নয়, নতুন আইনে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘প্যানিক বাটন’-এর মতো সুবিধা আনা হচ্ছে। কোনও ‘খদ্দেরের’ ব্যবহার বা কাজে অস্বস্তি বোধ করলে নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিয়ে সাহায্য চাইতে পারবেন সংশ্লিষ্ট যৌনকর্মী। চাইলে কোনও ‘খদ্দের’কে ‘না’ বলার অধিকার রয়েছে তাদের।

বিশ্বে কয়েক লাখ যৌনকর্মী রয়েছেন। ২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌন পেশাকে বৈধতা দেওয়া হয়। জার্মানি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশে যৌনবৃত্তি এখন বৈধ। কিন্তু পেশাজীবী হিসেবে যৌনকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের চুক্তির আওতায় আনার ঘটনা বেলজিয়ামেই প্রথম।