সোমবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি-অনিয়ম রুখতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধসহ ৭ দফা দাবি

রাইজিং ডেস্ক

বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি-অনিয়ম রুখতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধসহ ৭ দফা দাবি/ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা অবিলম্বে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রি-পেইড মিটার সংযোগের নামে তাদের ওপর অযৌক্তিক আর্থিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও জাতীয় সেচ পাম্প মালিক সমিতি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা থেকে এই দাবি উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ডিজিটাল মিটার থেকে প্রি-পেইড মিটারে রূপান্তরের ফলে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপানো হচ্ছে। বর্তমানে ডিজিটাল মিটারের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোওয়াটের জন্য গ্রাহকরা ডিমান্ড চার্জ দেন ৪২ টাকা, যা প্রি-পেইড মিটারের ক্ষেত্রে বেড়ে ১২৬ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে মিটার ভাড়া ৪০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতিটি গ্রাহককে অতিরিক্ত ১৬৬ টাকা দিতে হচ্ছে।

বক্তাদের অভিযোগ, দেশের প্রায় ৪ কোটি ৮৭ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে এই অতিরিক্ত অর্থ লুট করা হচ্ছে।

গ্রাহকদের আরেকটি বড় অভিযোগ হলো, বিদ্যুৎ বিল প্রদানে স্ল্যাব পদ্ধতিতে বৈষম্য করা হচ্ছে। তারা দাবি জানিয়েছেন, ০ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত এক রেটে ফ্ল্যাট বিল গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে, অতিরিক্ত বিলের উদাহরণ টেনে গাইবান্ধার গ্রাহকরা জানান, ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল করা হয়েছে। এক তদন্তে শুধু ২০১৪-১৬ সালেই ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার অতিরিক্ত বিল ধরা পড়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই অতিরিক্ত বিল সমন্বয় করা হয়নি। উল্টো গ্রাহকদের বিরুদ্ধে শতাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

এছাড়াও বক্তারা রেন্টাল-কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনা বন্ধের দাবি জানান।

মতবিনিময় সভা থেকে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা তাদের মূল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন:

১. প্রি-পেইড মিটার সংযোগ বন্ধ করতে হবে।

২. ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া বাতিল করতে হবে।

৩. ০-২০০ ইউনিট পর্যন্ত ফ্ল্যাট রেটে বিল গ্রহণ করতে হবে।

৪. রেন্টাল-কুইক রেন্টাল ও বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করতে হবে।

৫. নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।

৬. গ্রাহক হয়রানি ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে।

৭. নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন