বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

বিএমইউতে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট চালু, টিকেট কাটা যাবে ঘরে বসেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএমইউতে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট চালু, টিকেট কাটা যাবে ঘরে বসেই/ছবি: সংগৃহীত

রোগীর ভোগান্তি ও দীর্ঘ অপেক্ষা নিরসনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) তাদের বহির্বিভাগের জন্য অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম চালু করেছে। এর ফলে এখন থেকে বিএমইউ-এর বহির্বিভাগের টিকেট কাটতে রোগীদের আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে না।

মূলত রোগীদের দুর্ভোগ লাঘব, অযাচিত ভিড় এড়ানো এবং বহির্বিভাগ চিকিৎসাসেবা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই এই ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এই উদ্যোগ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠানে বিএমইউ ও পূবালী ব্যাংকের সঙ্গে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর হয়।

বিএমইউ এর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালানায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, এই অনলাইন টিকেট সিস্টেমটি দেশের প্রয়োজনেই চালু করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যেকোনো দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা ও গবেষণা সবসময় জনগণ কেন্দ্রিক হয়, এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে দেশের মানুষের জন্য।

তিনি আরও বলেন: “আমরা অনেকদিন থেকে ভাবছিলাম রোগীদের যেন দীর্ঘ অপেক্ষা করতে না হয়। অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম দীর্ঘ অপেক্ষা ও ভোগান্তি কমাবে। এই পদ্ধতিতে রোগীরা তাদের চাহিদামতো সময়ে চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন। সময়ের ব্যবধানে সবকিছু অনলাইন সিস্টেমে হবে। অনলাইন নানাদিক থেকে সুবিধা দিবে।”

অধ্যাপক শাহিনুল আলম জানান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তারা ‘ওয়েটিং টাইমটাকে চেম্বার বা হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যেতে’ চান। তিনি স্বীকার করেন যে, কার্যক্রমে শুরুর দিকে কিছুটা সমস্যা হতে পারে, তবে তা কাটিয়ে উঠতে সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ইতিবাচক সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্রায় সকল রোগীই বিএমইউ এর চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্ট, কিন্তু দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটা এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা তাদের কষ্ট দেয়। সেই কষ্ট দূরীকরণের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।

ভাইস-চ্যান্সেলর উল্লেখ করেন যে, বিএমইউকে ডিজিটালাইজড হাসপাতালে রূপান্তরের কার্যক্রম চলমান আছে। তিনি বলেন, “আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নাই। বিএমইউ এর অটোমেশন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতেই হবে।”

যেভাবে কাটা যাবে বিএমইউ-এর টিকেট:

রোগীরা এখন বাসায় বসেই অনলাইনে বিএমইউ-এর বহির্বিভাগের টিকেট কাটতে পারবেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে:

  • রোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (https://bmu.ac.bd) ভিজিট করবেন।
  • সেখানে অনলাইনে পেমেন্ট সম্পন্ন করবেন।
  • পেমেন্ট শেষে ব্যবস্থাপত্রটি (টিকেট) প্রিন্ট করে নেবেন।
  • টিকেটে উল্লিখিত বিভাগ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিতে পারবেন।

এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সকাল থেকেই হাসপাতালে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার প্রয়োজন হবে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ডা. একেএম আখতারুজ্জামান, এবং পূবালী ব্যাংক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

চিকিৎসকরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা, উচ্চতর মেডিক্যাল শিক্ষা ও গবেষণায় একটি আস্থার নাম। আজকেরই এই উদ্যোগ দেশের জন্য একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে মূলত রোগীরাই সবচাইতে বেশি উপকৃত হবেন।” তারা আশা প্রকাশ করেন যে আগামী দিনে সেবার সকল ক্ষেত্রেই এটি চালু করতে পারলে রোগীরা টিকেট কাটা থেকে শুরু করে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা স্বাচ্ছন্দ্যে নিতে পারবেন।

আরও পড়ুন