মে ১৩, ২০২৫

মঙ্গলবার ১৩ মে, ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়, সম্ভাব্য নাম ‘শক্তি’

Rising Cumilla - Cyclone.webp
ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সাগরে একটি প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং এর জের ধরে আগামী ২৪ থেকে ২৬ মে’র মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।

রোববার (১১ মে) মোস্তফা কামাল পলাশ তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘শক্তি’, যা শ্রীলঙ্কার প্রস্তাবিত।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ২৪ থেকে ২৬ মে নাগাদ স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। সম্ভাব্য আঘাতের ক্ষেত্র হিসেবে ভারতের ওড়িশা উপকূল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল।

যদিও এখনো ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হয়নি, তবে বঙ্গোপসাগরের বর্তমান পরিবেশ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত অনুকূল বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই সকলকে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”

এর আগে, বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছিল যে, আগামী ১৬ থেকে ১৮ মে’র মধ্যে সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। পরবর্তীতে এটি ক্রমশ লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ এবং শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

যদি এই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়, তবে উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া, ভারী বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।

এর ফলে মানুষের জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনাও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ইতিমধ্যেই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে।

আবহাওয়া অধিদফতর যদিও এখনো ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করেনি, তবে তারা পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। সময় মতো প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণকে এখন থেকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়াও, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কায় যে কোনো মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিডব্লিউওটি আরও জানিয়েছে, মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে গভীর সাগরে চলাচলের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। এই সময়ে আবহাওয়ার নিয়মিত আপডেট অনুসরণ করার এবং প্রয়োজনে আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন