রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

পেঁয়াজের দামে নতুন ঊর্ধ্বগতি, সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

Rising Cumilla - Vegetables
সবজি/ছবি: সংগৃহীত

সবজির বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হলেও ফের বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের বাজার। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। খুচরা বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে শীত মৌসুমের নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করলে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করছেন তারা।

রাজগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাবনার পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, প্রতিবেশী দেশে পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম হলেও দেশে দাম অনেক বেশি। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, প্রয়োজনে আমদানির পথেই যেতে হতে পারে। রাজগঞ্জ বাজারের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, “দাম লাফিয়ে বাড়ছে। নতুন পেঁয়াজ দ্রুত আসবে, তবে হঠাৎ আরও বেড়ে গেলে আমদানি ছাড়া উপায় থাকবে না।”

এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির পরিকল্পনা নিলেও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তির কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাদের ধারণা ছিল, নভেম্বরের মাঝামাঝিতেই দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসবে। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা যায়নি, উল্টো আবারও বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বাজারে সীমিত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে, যার দাম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।

শীতকালীন সবজি আংশিকভাবে বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক সবজির দাম কমে ১০ টাকা পর্যন্ত নেমে এসেছে। ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ও পটোল প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০ টাকা বেশি।

ফুলকপি ও বাঁধাকপির বড় সাইজের প্রতিটির দাম ৪০ টাকা, ছোটগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে করলার দাম আগের মতোই ৮০ টাকা। বরবটি, লাউ ও কচুর লতি ৬০ টাকা দরে স্থিতিশীল রয়েছে। মূলা মিলছে ৩৫ টাকা কেজিতে।

শিমের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে তিন সপ্তাহ আগের ১৪০ টাকা থেকে নেমে এখন ৬০ টাকায় এসেছে। বেগুনও স্থিতিশীল — লম্বা ও সবুজ বেগুন ৬০ টাকা এবং তাল বেগুন ৭০ টাকা, যা আগে ছিল আরও বেশি।

দেশি গাজর ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে, যা ২০ টাকা কম। দেশি টমেটো ১১০ টাকা কেজি, আগের তুলনায় ১০ টাকা কম। উচ্ছে যদিও ১০০ টাকায় উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে, তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ টাকা দাম কমেছে। শসা এখনো ৮০ টাকায় আছে। পেঁপে মিলছে ৩০ টাকা কেজিতে।

কাঁচা মরিচের দামও কমেছে। দুই সপ্তাহ আগের ১২০ টাকা থেকে এখন ৪০-৬০ টাকায় নেমে এসেছে। বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আজ সরবরাহ বেশি তাই দাম কম। সাধারণত ৮০ টাকা বা তার ওপরে বিক্রি করি।”

পেঁয়াজের বাজার অস্থিরতার সাথে রসুন ও আদার দামও বাড়তি। চায়না রসুন ১৮০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ১৬০ টাকা এবং চায়না আদা ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি রয়েছে।

ডিমের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। ফার্মের লাল ডিম ডজনপ্রতি ১২০ টাকা, খুচরায় হালি ৪০ টাকা। সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১১১০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগির দাম দুই সপ্তাহে ২০ টাকা কমে এখন ১৫০ টাকা কেজিতে এসেছে। সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা এবং হাইব্রিড সোনালি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক বিক্রেতা বলেন, “দাম এখন অনেক কমে এসেছে। বাজারে মুরগি বেশি, ক্রেতা তুলনামূলক কম।”

আরও পড়ুন